Romance আধুরা ইন্সান !

[ddey333]

মনামি চলে গেছে ! অভির সময় দিয়াকে নিয়ে বেশ কেটে যাচ্ছে ! কিন্তু বাড়িতে এলেই সারা বাড়িটা যেন গিলতে আসে ! দিপা দেবী একদম একা হয়ে যান ! কিছুতেই সময় কাটতে চায়না ! প্রনবেশবাবু বাড়ির বাগান নিয়ে সময় কাটিয়ে দেন ! আসলে তিনিও বুঝতে দিতে চান না নিজের বুকের ভিতরের খালি অনুভুতির কথা !

আগামি ২০ তারিখে অভিকে পুনা যেতে হবে ! একটা মাল্টিন্যাসানাল কোম্পানিতে ইন্টারভিউ আছে ! পাপা যখনি কাছে পাচ্ছেন তখনই অভিকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে ইন্টারভিউ দিতে পুনাতে না যেতে ! কলকাতায় কোন চাকরির চেষ্টা করতে ! শেষে অভি ওর পাপাকে বোঝায় যে এটা কলকাতার অফিসের জন্যই ইন্টারভিউ হচ্ছে ! যদি সিলেক্ট হয়ে যায় তাহলে হয়তো ওরা ট্রেইনিং এর জন্য ওকে কিছুদিন জার্মানি পাঠাবে ! তারপর পোস্টিং কলকাতার অফিসেই হবে ! প্রনবেশ বাবু কিছুই বলেন না ! মাথা নিচু করে ঘর থেকে বেড়িয়ে যান ! উনি কোনোদিন অভিকে ভাইপো হিসাবে দেখেন নি ! নিজের ছেলের মতোই মানুষ করেছেন ! আজ ওনার খুব কষ্ট হচ্ছে ! যে ছেলে পাপা কে মাকে ছেরে কোথাও যাবে না বলে এতগুলো চাকরি অবহেলায় ছেরে দিয়েছে সেই ছেলে আজ পুনা যাবে কাল জার্মানি ! " হে ভগবান ! এই বুড়ো বয়েসে যদি ছেলেও চলে যায় তাহলে কি করে বাঁচব ! " একটা গভির দীর্ঘশ্বাস প্রনবেশবাবুর মুখ থেকে বেড়িয়ে এলো !
দিয়া কিছুতেই কথা বলতে চায় না ! আজও অভি আর দিয়া অভিদের বারাসতের নিজেদের জমির আলে বসে ছিল ! দিয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা যে অভি ওকে ছেরে পুনা যাবে ! অভি কিছুতেই বোঝাতে পারেনা যে ও শুধুই ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছে ! দিয়ার চোখ দিয়ে শুধুই জলের ধারা ! শেষে অভি মনামিকে  ফোন করে দিয়াকে বোঝানোর জন্য  অনুরোধ করে ! মনামি  কিচ্ছুক্ষন দিয়ার সাথে কথা বলার পরই ভাইকে  বলে যে পুনে থেকে যেন সোজা মুম্বাই চলে যায় শর্বাণী দিদির বাড়ি ! ওরাও আসছে সেখানে ! মুম্বাই থেকে শিরডি যাবে সবাই মিলে দর্শন করতে !
অভি হু হাঁ করে ফোন ছেরে দিলো ! দিয়ার চোখের জল কিছুতেই বাঁধ মানতে চায়না ! যখন দিয়া নিজের আঁচলে চোখের জল মুছছে ! ঠিক তখনই দিয়ার মোবাইল বেজে ওঠে ! ফোনের স্ক্রিনে চোখ রাখতেই দিয়ার চোয়াল শক্ত হয়ে যায় ! ফোনটাকে স্পিকার মোডে এবং রেকর্ডিং মোডে  দিয়ে দিয়া গম্ভির স্বরে বলে ওঠে "বলুন জামাইবাবু ! " অভির শরীরের রক্ত টগবগিয়ে ওঠে ! দিয়া অভিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে শক্ত হাতে ওর হাত চেপে ধরে ! অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে বিদ্যুতের কণ্ঠস্বর ! " দিয়া দেবী ! কবে দেবেন ? অনেক দিন তো হোল গাধার সামনে গাজর ঝুলিয়ে আছেন ! এবার একটু গাজরটা নামিয়ে খেতে দেবেন নাকি অন্য কিছুর মতলবে আছেন ?"
অভির ইশারাতে দিয়া ফোনের উপর হাত চেপে ধরল ! অভি খুব নিচু স্বরে বলল "বলে দাও ! পরশুর মধ্যে উনি টাকা পেয়ে যাবেন ! " অভির কোথা মতোই মুখটাকে যতটা সম্ভব গম্ভির এবং শক্ত করে দিয়া বলে " পরশুর মধ্যে আপনি রিটার্ন পেয়ে যাবেন ! " বলেই ফোনটা কেটে দেয় ! ওদিকে বিদ্যুৎ ভেবে পায়না হটাত দিয়া এতো আত্মবিশ্বাস এবং টাকা কোথায় পেল ! "