Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica স্বীকারোক্তি (প্রথম পর্ব)
#6
।। ৬ ।।



রাত বাড়ছে, মধুযামিনী সমাগতপ্রায়। মিলন-আকাঙ্ক্ষায় উন্মুখ দুইটি হৃদয় অধৈর্য হয়ে উঠছে, জনারণ্যের মাঝে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগের অভাবে অসহিষ্ণু দু'জোড়া চোখ থেকে থেকে নিবদ্ধ হচ্ছে পরস্পরের প্রতি। কখন সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসবে, একের বাহুডোরে বাঁধা পড়বে অন্যজনের তনুলতা, নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাস মিশে যাবে, কানে কানে হবে অস্ফুটে উচ্চারণ, "প্রতি অঙ্গ লাগি কাঁপে প্রতি অঙ্গ মোর"। হাত বাড়ালেই তার হাত, তবু এই মুহূর্তে ছোঁয়ার অনুমতি নেই, এতটাই অনতিক্রম্য সে দূরত্ব। একটুকু নিরালার প্রত্যাশায় দুইজনেই লুকিয়ে চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
 
ছোড়দা আর নতুনবৌদির কথা বলছি।
 
আকাশে পূর্ণচন্দ্রের উদ্ভাসে চরাচর সাদা চাদরে ঢাকা বিস্রস্তকেশ রাজকুমারীর মত অভিমানী দেখাচ্ছে। মাঘ আর ফাল্গুনের সন্ধিক্ষণে শহরে মলয় মারুতের আবির্ভাব। ভূরিভোজের তাড়নায় অতিথিরা সকলে নীচের তলায় নেমে গেছে, ফাঁকা ছাদ তাই আরও রোম্যাণ্টিক, আরও নিবিড়। একটানা আলাপচারিতার পর কথার অভাবে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকি আমরা, মাঝেমাঝে আড়চোখে অন্যজনকে লক্ষ্য করা। কথার অভাবে, না একটু আগের দুর্ঘটনার অভিঘাত?
 
প্রাকৃতিক প্রয়োজনের তাগিদে অথবা মলিন হতে থাকা প্রসাধনে নতুন রূপটানের প্রণোদনায়, অথবা দুটোইদীপান্বিতা রেস্টরুমে যাওয়ামাত্র ফোন বার করে পরিচিত নম্বরে ডায়াল। কিছুক্ষণ বাজতে না বাজতেই সুরেলা কলার টিউন নির্মমভাবে থামিয়ে দিয়ে দুর্বোধ্য বিজাতীয় ভাষায় খেদপ্রকাশ,মর্মার্থঃ এই উপভোক্তা এখন আপনার সাথে বার্তালাপে ইচ্ছুক নন। অধৈর্য হয়ে তৎক্ষণাৎ বার্তাপ্রেরণ করলাম, "কি করছিস? কোথায় আছিস? আর ইউ ওকে?" শতচেষ্টা সত্ত্বেও এতক্ষণের জমিয়ে রাখা উৎকণ্ঠা চেপে রাখা গেল না। কিন্তু মুঠোফোন বোবার মত চেয়ে আছে। ব্যাপারটা কি? ঈর্ষা আর অভিমানকে হঠিয়ে মনের দখল নিচ্ছে দুর্ভাবনারা। ও ঠিক আছে তো? প্রায় দশ মিনিট অতিক্রান্ত, দীপান্বিতা যে কোনও মুহূর্তে চলে আসবে হয়তো। আসুক, পরোয়া করি না। আবারও ফোন লাগালাম। আবারও সেই পরিণতি। কয়েক সেকেণ্ড পরে মেসেজ, সম্ভবত আমায় করা ওর ক্ষুদ্রতম টেক্সট, "বিজি নাউ"।
 
আটটা বেজে গেছে অনেকক্ষণ আগে, লাঞ্চ ডেট এখনও চলছে। ব্যস্ত থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক! মনের ভেতরটা ধীরে ধীরে অসাড় হয়ে যাচ্ছে, কেমন নির্লিপ্ত-নিশ্চিন্ত বোধ জাগছে ক্রমশ। সবই মায়া, কেউ কারওর নয়। গোটা জগতটা আদতে একটা প্রহসনের মঞ্চ।
 
"হাই, বোর হচ্ছিলে খুব? ডিড আই টেক টু লংসো সরি গো"
 
রিনিরিনি আওয়াজে সম্বিৎ ফিরল। এতক্ষণের বিলম্বের কারণটা একপলক দেখেই বোঝা যাচ্ছে। চুলটা আরেকটু পরিপাটি ভাবে খোলা, ঠোঁটে ওষ্ঠরঞ্জনীর প্রলেপ দৃষ্টি এড়িয়ে যাবার নয়, বুকের কাছে ব্লাউজটা যেন সামান্য উন্মুক্ত আগের চেয়ে, শাড়িটাও ষড়যন্ত্র করে অন্যদিকে খানিকটা সরে গেছে। মন মাতাল করা মৃদুমন্দ সুরভি ভেসে আসছে ঈষৎ দৃশ্যমান বিভাজিকা থেকে। চোখেমুখে চাপা আবেদন, সামান্য বিভক্ত ওষ্ঠাধরে চটুল ইঙ্গিত। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না।
 
প্রায় এক মিনিট গোটা ছাদ নীরব, শুধু কিছু অর্ধস্ফুট শীৎকার বাদ দিলে অখণ্ড মৌনতা। শ্বাস নেবার তাগিদে একটু বিচ্ছিন্ন হলাম।
 
"এইমাত্র লাগালাম লিপস্টিকটা", দীপান্বিতার চোখে মৃদু ভর্ৎসনার সাথে প্রশ্রয়। এটুকুরই অপেক্ষা ছিল, কথাটা ভাল করে শেষ হবারও সুযোগ পেল না। পুনরায় মৌনতা। মুখে তপ্ত শ্বাসের হল্কা, ঘাড়ের কাছে রক্তরাঙা ম্যানিকিওরড নখগুলো আরও গভীরভাবে বসে যাচ্ছে, পেলব স্তন উন্মুখ হয়ে নিজেদের মেলে ধরেছে আমার পুরুষালি বুকে। আস্তে আস্তে ওর চুলের মধ্যে খেলা করছে আমার আঙুল, অভিজ্ঞ হাতে চুলের গোড়ায় মৃদু চাপ দিচ্ছি, নারীশরীর কেঁপে উঠছে থরথর। নীচের ঠোঁটে হাল্কা কামড়ের আভাস পেলাম, সাথে সাথে প্রত্যুত্তর। অন্য হাতে বেষ্টন করা বাইশটি বসন্ত পেরনো ক্ষীণকটি। দুষ্টুমির ইচ্ছে জাগল, সামান্য স্থান পরিবর্তন করতেই মুঠোয় তানপুরার খোল। বাসন্তীরঙা শাড়ির উপর থেকেই মর্দন করছি নধর নিতম্ব, নিজস্ব নারীর মত গুরুনিতম্বিনী না হলেও যথেষ্টই পরিপুষ্ট। পুরুষহাতের নিষ্পেষণে কাঁপন ছড়িয়ে পড়ল নারীদেহে। কাঁধ জড়িয়ে থাকা মৃণালভুজ আরো একটু ঘনিষ্ঠভাবে টেনে নিল নিজের দিকে। হাতে এখন নিটোল স্তনের মসৃণতা, হল্টার নেক ব্লাউজের আস্তরণের ওপর থেকে অনুভব করছি তার উষ্ণতা, তার জ্যামিতিক গঠন। তালুতে আগুন ধরাচ্ছে উন্মুখ হয়ে জেগে থাকা সুদৃঢ় নারীবৃন্ত। প্রবল মথনে মোমের মত গলে যাচ্ছে সদ্যপরিচিতা,নিজেকে সঁপে দিচ্ছে গভীর আলিঙ্গনে।
 
বহু যুগের ওপারে পরস্পরের ঠোঁট বিচ্ছিন্ন হল। বড় বড় দুই চোখ তাকিয়ে রয়েছে স্থির, অতিরিক্তের আর্তি নিয়ে। নাভিমূলে আলতো হাত রাখতেই ফের কম্পন, ছিন্নলতার মত আমার বুকে আশ্রয় নিল।
 
"যাওয়ার আগে একবার মীট করবে?"
"কাল সকালেই ফ্লাইট"
 
এক আকাশ অভিমান নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে দীপান্বিতা, ঠোঁটের অভিব্যক্তিতে ঝরে পড়া অনুযোগ। একটুক্ষণ নীরবে ওর মিষ্টি মুখের দিকে তাকিয়ে চুল ঘেঁটে দিলাম। আসন্ন বিচ্ছেদের আভাস পেয়েই চোখ ছলছল। বেদনার্ত দৃষ্টিতে অন্যদিকে তাকিয়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করল।
 
"সামার ইন্টার্নশিপের একটা অফার আছে এনসিবিএসে", একটু থেমে পাদপূরণ, "ওটা ব্যাঙ্গালোরে"
 
আঁতকে ওঠার কথা, উঠলাম না। নিজের মধ্যে প্রতিটি শব্দের মর্মোদ্ধার করতে করতেই শান্তভাবে আরেকবার এই নারীকে বুকে টেনে নিয়েছি, "কন্ট্যাক্ট কোরো"
 
আরো কিছু নীরব মুহূর্ত কেটে গেল, আপাতত শেষবারের মত তাজা নতুন নারীঘ্রাণ ফুসফুস ভরে নিলাম, "চলো নীচে যাই, লাস্ট ব্যাচের বেশি দেরি নেই"। মৌন সম্মতি জানিয়ে বাধ্য মেয়ের মত সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল দীপান্বিতা। ছাদের দরজার কাছে এসে আবারও নিবিড় আলিঙ্গন, পার্থক্য বলতে উদ্যোগটা এবার আমার তরফ থেকে নয়। চুমুতে ভরিয়ে দিতে দিতেই চমকে দিয়ে প্যাণ্টের ভিতরের উথথানকে নিজের মুঠোবন্দী করেছে। কয়েক সেকেণ্ডের প্রবল বিমর্দনে আমি হতবাক, তীব্রকঠিন। মিষ্টি করে চোখ মেরে শেষ একটা চুম্বন, তারপরই লাজুক মুখে হরিণীর মত তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেল। ও জানে ঠিক এই অবস্থায় আমি বাকিদের সামনে যেতে পারব না।
 
পাপবোধ? কই, জাগছে না তো! কয়েকপল দাঁড়িয়ে রইলাম, অভিজ্ঞতাটা নিজের মধ্যে জারিত হওয়ার সময়টুকু দিয়ে। ভালই কাটল ছুটিটা। অজান্তেই পকেট হাতড়ে মোবাইলটা বার করেছি, ডিজিটাল সূচক আস্তে আস্তে নয়ের দিকে এগোচ্ছে। এখনও রিক্ত মেসেজবক্স।
 
“কা তব কান্তা কস্তে পুত্রঃ, সংসারোহয়মতীববিচিত্রঃ”
 
এবার আরও নীচে নামার পালা।
[+] 1 user Likes অনঙ্গপাল's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: স্বীকারোক্তি (প্রথম ভাগ) - by অনঙ্গপাল - 23-02-2021, 08:02 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)