Thread Rating:
  • 26 Vote(s) - 3.31 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পুরোনো টুথব্রাশ
#1
অনেকদিন পর। কিছু বন্ধু আমার তিন বছর আগে লেখা গল্পটার রিপোস্ট অনুরোধ করেছেন। দিলাম
1
জব্বর ছিল কিন্তু প্ল্যানটা। ঠিক সন্ধ্যা পাঁচটা দশে সুহাসকে ফোন করলাম, দিল্লি এয়ারপোর্ট থেকে, ১২-B বোর্ডিং গেটের সামনে বসে। সামনে বিশাল জনসমুদ্র। তিনটে রিং আর ওপার থেকে ভদ্রমহিলার 'শ্বাসরুদ্ধ' কণ্ঠস্বর জানান দিলো যে 'অল ইস ওয়েল।' কল করার ইচ্ছা ছিল না, কিন্তু এক্কেবারে শেষ মুহূর্তে রঞ্জু বললো, "বাবা, আজ শুক্রবার, দু ঘন্টা মোবাইল বন্ধ রাখলে মা কিন্তু সন্দেহ করবে।" তাই............
"এই যে, ডেঙ্গু মিটিং শুরু হবে এক্ষুনি, কতক্ষন চলবে কে জানে?" 
"হুঁ, তো?"   
"বলছি যে মোবাইলটা অফ করছি, আমাকে পাবে না।" নিরৎসুক ভাবে জানাই। 
"ও, পেছনে কিসের চিল্লামিল্লি হচ্ছে? তুমি এখন কোথায়?" উনি অনুসন্ধিৎসু। 
খেয়েছে! একটু তাড়াহুড়ো করি, "এই মানে…, আমি মিনিস্ট্রিতে, মানে… প্রচুর লোক গিজগিজ করছে।"
"সকালে তো কিছু বললে না, হটাৎ?" 
চোরাবালি আর কাকে বলে!
এর মধ্যেই হটাৎ বোর্ডিংয়ের জন্য জনৈক মহিলার ঘোষণা এবং সমগ্র ভারতবর্ষের জনতা একসাথে উঠে দাঁড়ালেন। প্রলয় এলো বলে। 
এদিকে সুহাসিনীদেবী প্রশ্নবাণ চালাচ্ছেন, "কোথায় যেতে বলছে?"
যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই...? শ্রীগুরুর কৃপায় মাথায় বুদ্ধি এলো, "মিনিস্টার এসে গেছেন, এবার আসি।" বলে দ্রুত ফোনের সুইচ অফ করলাম। ফাঁড়া কাটলো।
কপালের ঘামটা মুছে ফেললাম।
তিনি মোটেও জানেন না যে আমি হটাৎ করে পুণা এসে ওনাকে 'চমকে' দেব।
সাপের মতো আঁকা বাঁকা লাইনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে দিনের ঘটনাবলীর ওপর চোখটা বুলিয়ে নিলাম। সদাশয় সরকার বাহাদুরের সৌজন্যে শনিবার আচমকা ছুটি তদুপরি মঙ্গলবারে আবার ছুটি। মোদ্দা কথা, সোমবার ছুটি নিলে চারদিন। রঞ্জুকে অনেক বললাম সাথে আসতে কিন্তু আজকাল তার মতিগতি বোঝা ভার। সর্বক্ষন বিরক্ত ‘অকেজো' মা বাবার ওপর। 
লক্ষ করলাম যে লাইনে খানিকটা পিছিয়ে গেছি। কিছু লোক মাঝখানে ঢুকে, ধাক্কাধাক্কি করে বাসে উঠে (এমন ভাব যেন শেষের কুড়ি জনকে ওরা ছেড়ে চলে যাবে), পেল্লায় হ্যান্ডব্যাগগুলো মারাত্মক ভাবে ওপরে রেখে, এবং আমার পা মাড়িয়ে চূড়ান্তরূপে জানান দিলো যে আমরা নির্ভেজাল ভারতীয়।    
বাকি আড়াই ঘন্টা কাটলো ছোটোখাটো জীবনমরণ সমস্যার মাধ্যমে যথা, আমার পার্শ্বস্থ দুই সহযাত্রী মাঝেমধ্যেই গুঁতো মারলেন আর্মরেস্টটার দখল নেবার জন্য আর 'গোদের ওপর বিষফোঁড়,' এয়ারহোস্টেস মহোদয়া মনে হলো ক্ষুন্ন হলেন কিছুই না কেনার দরুন। 
শেষমেশ, প্লেন বাবাজি নামলেন ও থামলেন। মুহূর্তেরমধ্যে সর্ব মনুষ্যজাতি উত্তিষ্ঠ হলেন, কোথায় যাবেন ঈশ্বর জানেন। করিডোরে দাঁড়িয়ে রঞ্জুকে ফোনে ধরলাম। ভাবলেশহীন উদাসীন কণ্ঠস্বর ভেসে এলো, "পৌঁছালে?"
"হুম। কোনো খবর?"
"ফোন এসেছিলো।"
"কিছু জিজ্ঞাসা করলো নাকি?"
"তোমার whereabouts জানতে চাইছিলো।"
"তা তুই কি বললি?"
"বললাম, জানি না। "
"ঠিক তো? আর কি বললি?" 
"আর কিচ্ছু না! আমি জানি কি বলতে হবে, ultimately গন্ডগোলটা কিন্তু তুমিই করবে বাবা!"
লাইনটা কেটে দিলো! আজকালকার ছেলেমেয়েরা মা বাবাকে সম্মান দিতে জানে না। আমাদের ছোটবেলায় এরকম করলে কানটা..........., সে যাক গে।
পেছন থেকে একটা বলিষ্ঠ ঠেলা খেয়ে চিন্তাধারার সূত্রটা ছিন্ন হয়ে গেলো। ভিড়ের সাথে প্লেনের দরজার বাইরে প্রসব হলাম 'ডিম্বের' ন্যায়। 
মিনিট পনেরোর মধ্যেই 'ওলা' গাড়ি চড়ে বাড়ির দিকে যাত্রা শুরু করলাম। আর আধঘন্টা, ব্যাস! 
এইবার সময়! সুহাসীনিকে ফোন করলাম। সেই তৃতীয় রিঙে হাঁফধরা আওয়াজ। সব ঠিক হ্যায়। 
"কি, গাড়িতে নাকি?" ওর প্রশ্ন। 
এবার অসংশয়ে বলে ফেললাম, "হ্যাঁ।"
"মিটিং হলো?"
প্রাণ খুলে হাসলাম, "ধুস! কিসের মিটিং আর আমার কথা শুনছেই বা কে, যা বলি সবই নাকচ হয়ে যায়? আমি তো ভালো চা আর টা খেতে গিয়েছিলাম। তোমার কি চলছে?"
"আরে শোনো না! তোমার ফোনের পরই আদির ফোন এলো। পুণা ক্লাবে একটা গেটটুগেদার আছে তাতে বস স্পেশাল ইনভাইট করেছেন।"
"কী করবে? চলে যাও। কারো বিবাহবার্ষিকী টার্ষিকী নাকি?"
"না বোধহয়। ভাবলাম তোমাকে জিজ্ঞাসা করবো তা তোমার মোবাইল তো সময় বুঝে অফ। তারপর হ্যাঁ বলে দিলাম, আদি এসেছে, কথা বলো।"  
আদিত্যে, ছেলেটা ভালো, একটু উত্তেজনাপ্রবণ, সবসময় ব্যস্তসমস্ত ভাব। অল্প সময়ের মধ্যেই ওর ছটফটে গলা শুনতে পেলাম। 
"স্যার, দিল্লির কি খবর, আপনাকে খুব মিস করি আমরা।"
"বাজে কথা, তোমরাই তো আমাকে ঠেলেঠুলে পাঠালে। যাই হোক, কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমার বৌ কে?"
"স্যার, পুণা ক্লাবে গেটটুগেদার, অনেক রিকোয়েস্ট করতে হলো, তবে মানলেন।"
"কংগ্রাচুলেশন। আমার কথা তো উনি কক্ষনো শোনেন না। তা কখন শেষ হবে?"
"স্যার, ম্যাক্সিমাম দশটা। আমি ছেড়ে যাবো।"
"ঠিক আছে ভাই, নিয়ে যাও কিন্তু ফেরত দিয়ে যেও।"
"স্যার, কি যে বলেন, কথা বলুন ম্যাডামের সাথে।"
"তোমরা রাত্রে কি খাচ্ছ?" ওনার প্রশ্ন। 
"কি আর খাবো, আমাদের তো আর পার্টি নেই।"
"ইশশ, কি জেলাস। তোমরাও গিয়ে পার্টি করো না, ‘ফ্যাটি বাও’ চলে যাও।"
"দেখি কি করি," বলে লাইন কেটে দিলাম।
পরিকল্পনাটা সামান্য পাল্টাতে হবে। প্রায় মিনিট পনেরো পৌঁছাতে বাকি এখনো। নিঃসন্দেহে, ওদের মিস করবো। যাকগে, আমার কাছে একটা চাবির গোছা থাকে আলাদা করে। অনেক রকম বিচিত্র প্ল্যান ভেঁজেছিলাম, ভেস্তে গেলো। আমাদের ফ্ল্যাটটা একটা কমপ্লেক্সের ভেতরে। গার্ডের চোখ এড়িয়ে চুপচাপ সিঁড়ি বেয়ে উঠে দরজাটা খুললাম। 
ঘরের ভেতরটা ঠিক যেমন ছিল তেমনি পেলাম। তিনমাস আগে এইরকমই একটা সারপ্রাইস প্ল্যান করেছিলাম। যেইনা নক করেছি অমনি ভদ্রমহিলা সেজেগুজে বেরিয়ে এসে বলেলন, "এসেছো, খাবার তৈরী। হাতমুখ ধুয়ে নাও।"
কি রাগ না হচ্ছিলো! পরে বুঝলাম যে আমার অনেকগুলো ছোট ছোট ভুলের জন্য এই বিড়ম্বনা।
আশা করা যাক এইবার সেই বোকা বোকা ভুলগুলো এড়ান গেছে!
আমি একটা আরামকেদারায় বসে চিন্তা করতে লাগলাম। দু ঘন্টা কাটাতে হবে আর একটু ক্ষিদে ক্ষিদে পাচ্ছিল। আমি সাবধানে ব্যাগটা লুকিয়ে রেখে নিচে নেমে গেলাম। কেউ যেন কিচ্ছু জানতে না পায়।   গার্ডটা এবারও আমাকে দেখতে পেলোনা। তারপর? অটো ধরে সোজা 'পাল্প জয়েন্ট', আমার অনেকদিনের ঠেক। 
এই পাল্প জয়েন্টের বিষয় দুটো কথা না বললেই নয়। এইখানে, আমরা মানে আমি আর সুহাসিনী একসূত্রে বাঁধা পড়েছিলাম। আমরা দুজনেই ছিলাম কর্মচঞ্চল আর চোখে ছিল বেড়ানোর শখ। টাকা পয়সা ছিল কম আর বদভ্যাস ছিল অনেক তবু....... সুযোগ পেলেই আমরা পাগলের মতো ঘুরে বেড়াতাম পুনার আশেপাশে বিভিন্ন দুর্গগুলোতে। আমাদের জন্য পুরন্দর ছিল রোমান্টিক কেনিলওয়ার্থ, লোনাভালা ছিল গ্রেট ক্যানিয়ন আর কাত্রজের ঝর্ণাগুলো ছিল নায়াগ্রা।
আমরা মনেপ্রাণে ছিলাম 'সর্দার সদাশিবের' চেলা, আজও আছি। 
সে কুড়ি বছর আগেকার কথা। আজ আমি চুয়াল্লিশ আর সুহাস একচল্লিশ।
সেই পাল্প জয়েন্টে বসে মনের আনন্দে, দু গ্লাস আখের রস, বাটার চিকেন, ম্যাংগো পাল্প প্লাস দুটো ইন্ডিয়া কিংস সাবাড় করলাম। এ সবই কিন্তু আমার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে মানা। 
গোল্লায় যাক মানা।

_____________
[+] 5 users Like Trambak's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
পুরোনো টুথব্রাশ - by Trambak - 09-12-2020, 01:04 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)