Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ঝর্ণা The Untold story ! সমাপ্ত
কি কঠিন সেই ৭২ ঘন্টা কাটানো ! এইরকম উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগ নিয়ে সবাই হাসপাতালে বসে আছি ! নাওয়া  খাওয়া সবার মাথায় উঠেছে ! একটাই খুশির খবর কমলদার জ্ঞান ফিরেছে ! আমি নিজে গিয়ে বেশ কয়েকবার দেখে এসেছি ! প্রতিবারই উনি আমাকে মিতালীর খবর জিজ্ঞাসা করেছেন সর আমি মিথ্যা উত্তর দিয়েছি " অপারেশন সাকসেসফুল ! এখন মিতালি অনেক ভালো আছে ! " এ ছাড়া আমার কাছে কোনো উত্তর ছিলোনা ! লাহিড়ীদা ঘোষদকে জোর করে কানাইয়ের সাথে হোটেলে পাঠিয়ে দিয়েছি ! দুজনেরই বয়স হয়েছে ! এতো ট্রেস ওয়ানডের শরীর নিতে পারবে না ! মঞ্জু আর চৈতালিকেও  পাঠিয়ে দিয়েছি ! এখন শুধু আমরা তিনজন ! রাজুকে কমলদার কাছে রেখে আমি মিতালীর আইসিইউয়ের বাইরে বসে আছি ! মাঝে মাঝে বাইরে গিয়ে সিগারেট খেয়ে ফিরে আসছি ! টেনশনে আমার মাথা কাজ করছে না ! ভোরের দিকে একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ! হাসপাতালের মাইকে মিতালি ঘোষের এটেন্ডেন্ট কে ডাকা হচ্ছে ! ধড়মড়  করে উঠে আই  সি ইউ এর সাথে নার্সের কেবিনে গেলাম ! নার্স আমার হাতে একটা প্রেসক্রিপশন দিয়ে বললেন তাড়াতাড়ি এই ইঞ্জেকশনটা নিয়ে আসুন ! হাসপাতালের বাইরেই ওষুধের দোকান যেটা ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে ! সেখানে গিয়ে প্রেসক্রিপশন দিতেই ভদ্রলোক আমার দিকে একটা করুনার দৃষ্টিতে তাকালো ! ওনার চাহুনি আমার বুকে সমস্ত রক্ত জল করে দিলো ! বুঝে গেলাম মিতালীর বাঁচার সম্ভবনা একেবারেই নেই ! একরকম কাঁদতে কাঁদতে নার্সের হাতে ইনজেকশনটা  দিয়ে দিলাম ! নার্স আমাকে বললো " ভগবানের কাছে প্রার্থনা করো ! " এইটুকু কথাই  যথেষ্ট ছিলো আমার মনের দৃঢ়তাকে ভেঙে চুরমার্ করার জন্য !
বেশ কিছুক্ষন একা  একাই  কেঁদেছিলাম  ! কাঁধে সমীরের হাতের চাপ  ! " সব ঠিক হয়ে যাবে সুনন্দ ! কেঁদে লাভ নেই ! মনকে শক্ত কর ! ! তোর তো জানাই ছিল যে মিতালি আর বাঁচবে না ! এখনও তো মিতালীর মরার খবর আসেনি ! আশা রাখ ! ভগবানের উপর ভরসা রাখ ! সব ঠিক হয়ে যাবে ! "
আমি কিছু বললাম না ! ইশারায় ওকে বসতে বলে আমি হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে এলাম ! সকালের সূর্যের দিকে তাকিয়ে প্রণাম করে মিতালীর জীবন ভিক্ষা চাইলাম ! ভিতরে যেতে মন চাইছে না ! একটাই ভয় যদি গিয়ে শুনতে পাই মিতালি আর নেই। ......
এক কাপ চা খেয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে টান  দিচ্ছি ! সমীর হন্তদন্ত হয়ে ছুঁতে আসলো ! ওর এইভাবে আসা দেখে  ও ভেঙে গেলো ! তাহলে সত্যিই মিতালি আমাদের ছেড়ে চলে গেলো নাকি ?
হাঁফাতে হাঁফাতে বললো "তাড়াতাড়ি চল ! ডাক্তার ডাকছেন !"
দৌড়েই ফিরে এলাম ! ডাক্তার আমাকে দেখে একটু হেসে বললেন "ভোর বেলার দিকে একটু প্রবলেম হয়েছিল ! এখন অবস্থা অনেক স্টেবল ! আশা করছি ওকে বাঁচিয়ে ফিরিয়ে আন্তে পারবো ৫০-৫০ আশা আছে  ! কিন্তু ওর হার্ট ঠিকমতো রেসপন্স  করছে না ! এটাই একটা চিন্তার বিষয় !  এই ইঞ্জেকশনগুলো এনেদিন ! " বলেই আমার হাতে একটা প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দিলেন !
আমি সমীরকে বসিয়ে আবার ওষুধের দোকানে গেলাম ! দোকানদার এবারের প্রেসক্রিপশন দেখে একটু হাসলেন ! বুঝলাম যে ভয় কাটতে শুরু করেছে !
ফিরে এসে নার্সের হাতে ইঞ্জেকশনগুলো দিতেই উনি বললেন " ভোর বেলায় মিতালীর হার্ট এট্যাক হয়েছিল ! তাই..... এতো সকালবেলাতেই ডাক্তারবাবুকে ডাকতে হয়েছিল ! ইসিজি করানো হয়ে গেছে ! এখন অবস্থা অনেক স্টেবল ! যতক্ষণ না জ্ঞান ফিরছে ততক্ষন খুব চিন্তা ! আমি সমীরকে বারণ করলাম কাউকে কিছুই যেন না বলে ! তাহলে ওরা চিন্তায় পরে যাবে !
সকাল আটটা  নাগাদ সবাই হোটেল থেকে হাসপাতালে চলে এলেন ! এসেই আমাকে সমীর আর রাজুকে ছুটি দিয়ে দিলেন ! আমি আস্তে চাইছিলাম না ! কিন্তু কানাই আর মঞ্জু জোর করেই আমাদের হোটেলে রেস্ট নিতে পাঠিয়ে দিলেন ! কমলদা এখন অনেক ভালো আছেন ! সবার সাথে দেখা হয়েছে ! ভালোই কথা বলছেন ! সবাইকে একটাই প্রশ্ন করে যাচ্ছেন "মিতালি কেমন আছে !" আমার মতোই সবাই মিথ্যা কথাই  বলে কমলদাকে স্বান্তনা দিচ্ছে !
হেটেলের রুমে এসে রাজু সমীর আর আমি শুয়ে পড়লাম ! কিছুক্ষনের মধ্যেই চোখে ঘুম চলে এলো ! ১২টা নাগাদ আমার ঘুম ভেঙে গেলো ! আমি স্নান করে ড্রেস চেঞ্জ করে আস্তে করে দরজা বন্ধ করে হাসপাতালের উদেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম ! খিদেও পেয়েছিলো ! হাসপাতালের বাইরের হোটেল থেকে ধোসা খেয়ে নিলাম ! সবাই আইসিইউর সামনে বসে আছে ! আমি ওদেরকে খেতে পাঠিয়ে দিলাম ! নার্সের সাথে দেখা করতে গেলাম  ! এখন অন্য নার্স বসে আছে ! ওনাকে মিতালীর কথা জিজ্ঞাসা করতেই খেঁকিয়ে উঠলেন "কত জনকে উত্তর দিতে হবে যে এখনো ওর জ্ঞান ফেরেনি ?"
- না মানে ওর অবস্থা কেমন সেটাই জিজ্ঞাসা করছি !
- এখনো কিছুই বলা যাবে না ! সেইরকম কিছু হলে আপনাদের ডাকা হবে ! বলেই আমার মুখের উপর গেট বন্ধ করে দিলো ! রাতের নার্সের সাথে এই নার্সের ব্যবহারের আকাশ পাতাল তফাৎ ! যদি একজন নার্সের ব্যবহার এমন হয় তাহলে সে রুগীর সেবা কি করে করবে ? একটা আশংকা নিয়ে খুব চিন্তায় রইলাম ! ওরা  খেয়ে ফিরল ! বেশ কিছুক্ষন পরে সেই নার্সটি বাইরে বেরিয়ে এসে সবাইকে তাড়িয়ে দিলো ! "এটা  হাসপাতাল ! আড্ডা মারার জায়গা নয় ! একজন এটেনডেন্ট শুধু থাকবে ! বাকি সবাই চলে যান ! " একরকম জোর করেই সবাইকে তাড়িয়ে দিলো ! ঘোষদা থাকতে চাইলেন ! আমি ঘোষদাকে বললাম " আমি আছি দাদা ! "
সবাই চলে গেলো ! কানাই কমলদার কাছে আর আমি আইসিইউ র বাইরে !
যে ডাক্তার অপারেশন করেছিলেন তিনি আরও পাঁচজন তরুণ ডাক্তারদের নিয়ে ঢুকলেন ! কিছুক্ষন পরে সেই পাঁচজন চলে গেলে আরো পাঁচজন ডাক্তার এলো ! কি চলছে সেটা বুঝতে পারছি না ! তাহলে কি মিতালীর আবার কিছু হলো ? এতো ডাক্তার আসছে যাচ্ছে ! ব্যাপারটা নিশ্চই সুবিধার নয় ! উৎকণ্ঠায় আইসিইউর কাঁচের দেওয়াল দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম ! সমস্ত ডাক্তার মিতালীকে গোল করে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে ! আর ডাক্তার রহমানের (যিনি অপারেশন করেছিলেন ) কথা শুনছে ! কেউ মঞ্জুর পাল্স  দেখতে ব্যস্ত কেউ অপারেশন হিস্ট্রি পড়তে ব্যস্ত ! আমার বুকের মাঝে ধুপ ধুপ শব্দে হাঁপর চলছে ! নার্স একটা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ নিয়ে গিয়ে মিতালীর শরীরে ঢুকিয়ে দিলো !  
সন্ধ্যে ছটা  নাগাদ ডাক্তার এলেন ! আমাকে ডাকলেন
দুরুদুরু বুকে ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলাম ! আমাকে দেখেই ডাক্তার বললেন মিতালির জ্ঞান ফিরেছিল ! এখন আর ভয়ের কিছুই নেই !
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ঝর্ণা The Untold story ! - by dada_of_india - 09-12-2020, 11:48 AM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)