Thread Rating:
  • 65 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(28-11-2020, 07:54 PM)pinuram Wrote: পর্ব সাত – (#3-32)

 
রিশুর চোখের চাহনি দেখে শালিনী হেসে ফেলে, “ভাইয়া, ঝিনুক কোথাও পালিয়ে যাচ্ছে না।”

শালিনীর কথা শুনে লজ্জায় পরে যায় রিশু, হেসে ওকে বলে, “হটাত বাইরে ডিনার কেন? বাড়িতেই অর্ডার করে দিচ্ছি।”

ইন্দ্রজিত নাছোড়বান্দা, “না না, ও সব হবে না। আমি অলরেডি একটা বড় রেস্টুরেন্টে টেবিল বুক করে ফেলেছি।”

অবাক হয়ে যায় রিশু, “মানে?”

শালিনী হেসে বলে, “সারপ্রাইজ আছে ভাইয়া, তুমি তাড়াতাড়ি স্নান সেরে রেডি হয়ে নাও।” ঝিনুক নিজের শোয়ার ঘরের দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল, ওর দিকে তাকিয়ে শালিনী বলে, “এবারে ঠিক আছে ত? তুমিও রেডি হয়ে নাও।”
 
রিশু আর ঝিনুকের চোখে চোখে কথা হয়, ঝিনুক জিজ্ঞেস করে, কি করবে। রিশুর কাছ থেকে উত্তর আসে, ও নিরুপায়, সুতরাং তৈরি হতেই হবে। তৈরি হতে হবে শুনে ভীষণ ভাবনায় পরে যায় ঝিনুক, শাড়ি পড়তে নারাজ, একা একা শাড়ি পড়তে জানে না, ভালো সালোয়ার কামিজ বলতে বিশেষ নেই। আলমারি খুলে দাঁড়িয়ে ভাবতে শুরু করে দেয় কি পরা যায়। শালিনীর পরনে জিন্স শারট আর একটা লম্বা ফারের জ্যাকেট, তার সাথে মিলিয়ে কি কিছু পড়বে? জিন্স শারট ফারের জ্যাকেট ওর কাছে আছে বটে কিন্তু রিশুর সামনে কোনদিন জিন্স পরেনি। রিশুকে শোয়ার ঘরের মধ্যে ঢুকতে দেখে বুকে একটু বল পায় ঝিনুক।
 
খোলা আলমারির সামনে ওকে ওই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই রিশুর বুঝতে পারে যে পোশাকের ব্যাপারে ঝিনুক ধন্দে পরে গেছে। ওর পাশে দাঁড়িয়ে আলমারির ভেতরে একবার চোখ বুলিয়ে বলে, “সেদিন একটা ওফ হোয়াইট জ্যাকেট কিনে ছিলে না?” মাথা দোলায় ঝিনুক, হ্যাঁ। রিশু বলে, “বাইরে কিন্তু অনেক ঠান্ডা, ওটা পরে নিও।”

ঝিনুক প্রশ্ন করে, “আর?”

স্মিত হাসে রিশু, যেকোনো পোশাকেই ঝিনুককে মানায়, ওর সামনে একটু ঝুঁকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার কি পছন্দ?”

এতটাই ঝুঁকে এসেছিল রিশুর মাথা ওর মুখের সামনে যে ওর সারা মুখ ভেসে গিয়েছিল রিশুর উষ্ণ শ্বাসে। খানিকটা ইতস্তত করেই নরম গলায় ঝিনুক ওকে জিজ্ঞেস করে, “জিন্স পড়ব?”

জিন্স শুনেই বুকের ভেতরটা উফফ করে ওঠে রিশুর। ছবিতেই ঝিনুককে জিন্স পড়তে দেখেছে, আলমারির মধ্যে আরো অনেক ধরনের সাম্প্রতিক কালের ডিজাইনার পোশাক আসাকে ভর্তি, মাঝে মাঝে ভীষণ ইচ্ছে হয় ওই পোশাকে ঝিনুককে দেখতে।
মৃদু হেসে রিশু সম্মতি দেয়, “হ্যাঁ, পর কে মানা করেছে।”

আলমারি থেকে জিন্স বার করার পরে নিজের অজান্তেই আচমকা রিশুর বুকের ওপরে হাত রেখে আলতো ধাক্কা মেরে বলে, “এই তুমি স্নানে যাবে না?”
 
কোনদিন ঝিনুক এইভাবে রিশুকে স্পর্শ করেনি, বাইকে বসার সময়ে ওর কাঁধের ওপরে হাত রাখা ছাড়া আর সেই রবিবার ফুচকা খাওয়ানোর সময় ছাড়া এতদিনে ওকে ছোঁয়নি ঝিনুক। তন্বী সুন্দরী মোহময়ী স্ত্রীর লাজে রাঙ্গা চোখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে যায়। হটাত করেই এইভাবে আদরের ছোঁয়ায় বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে পরে রিশু। এইটুকু ছোঁয়াতেই ঝিনুকের কান লাল হয়ে গেছে, আর ওর সাথে চোখ মেলাতে পারছে না দেখে নিজের ও একটু লজ্জা লাগে। 
 
বুকের ওপরে যেখানে ঝিনুকের হাতের ছোঁয়া লেগেছিল সেখানে ডান হাত চেপে মৃদু হেসে উত্তর দেয়, “এই যাচ্ছি।”

রিশুর ঠোঁটের হাসি দেখে ভীষণ ভাবেই লজ্জিত হয়ে পরে ঝিনুক, ধ্যাত কি যে করে না মাঝে মাঝে, নিচের ঠোঁট দাঁতে কেটে নরম কন্ঠে বলে, “আমি চেঞ্জ করব।”

রিশু বলতে যাচ্ছিল, করে ফেল অন্য কেউ কি আর দেখছে নাকি? লাজুক হেসে নিজের মাথার চুলে আঙ্গুল বুলিয়ে বলে, “আমার জামা কাপড় গুলো নিতে দেবে ত?”

রিশুর হাসি হাসি চোখের সামনে দাঁড়াতে অক্ষম হয়ে পরে ঝিনুক। নরম পায়ে আলমারি ছেড়ে পেছনে সরে দাঁড়িয়ে মৃদু কন্ঠে বলে, “আচ্ছা তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও।”

আলমারি থেকে একটা সাদা রঙের শারট আর জিন্স বের করার পরে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে বলে, “তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিও।”

আবার সেই সাদা শারট, নাক কুঁচকে একটু ইতস্তত করেই জিজ্ঞেস করে, “আবার সেই সাদা শারট?”

মাথা চুলকায় রিশু, “কি পড়ব তাহলে?”

দু’পা রিশুর দিকে এগিয়ে আসতেই, রিশু আলমারি ছেড়ে সরে দাঁড়ায়। রিশুর শারটের তাকের মধ্যে থেকে একটা লাল আর কালো চেক জামা বার করে বলে, “এটা পর।”
 
জামাটা ওর খুব প্রিয়, মা অনেক বছর আগে কিনে দিয়েছিল কিন্তু ওই জামা নিয়ে একবার চন্দ্রিকার সাথে মন কষাকষি হওয়ার পর থেকে সেই জামা আর কোনদিন পরা হয়নি। এই জামার ইতিহাস ঝিনুকের অজানা কিন্তু নিজের অজান্তেই মায়ের পছন্দের জামা ওর হাতে তুলে দেওয়াতে আবেগের বশে ওর চোখ জোড়া অল্প ঝাপসা হয়ে আসে।
 
ঝিনুকের সামনে অল্প মাথা নুইয়ে হেসে বলে, “জো হুকুম...” ইচ্ছে করছিল গাল দুটি চটকে আদর করে দেয়।
 
লাজে রাঙ্গা নবোঢ়া ঝিনুক চোখ তুলে তাকায় রিশুর চোখের দিকে, ছোট শব্দটা বলার সময়ে কি ওর গলা কেঁপে গেল নাকি? এই মানুষকে দেখেত মনে হয় না। পরস্পরের চোখের তারা আটকে যায়। ক্ষণিকের জন্য রিশুর মনে হয় ঝিনুককে জড়িয়ে ধরে বুকের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে, পর মুহূর্তে মনে হয় এইভাবে ছুঁতে গেলে যদি আবার যদি কিছু বলে বসে? দরজার বাইরে যদি শালিনী আর ইন্দ্রজিত উপস্থিত না থাকত তাহলে রিশু কোন বাহানা করে ঝিনুকের গাল একটু ছুঁয়ে দেখত। রোজদিন রাতে খাওয়ার পরে নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে ঝিনুক যখন বিছানায় বসে রাতের প্রসাধনি সারে তখন টিভি দেখতে দেখতে মাঝে মাঝে রিশুর চোখ চলে যায় ওইদিকে। হাতের তালুর মধ্যে ওর দেওয়া সেই অয়েন্টমেন্টটা অতি যত্নে এখন নিজের গালের আঁচড়ের দাগের ওপরে লাগায়। খুব কাছ থেকে না দেখলে সেই দাগ এখন আর বোঝা যায় না যদিও। রিশুর সেই সময়ে একবারের জন্য মনে হয়েছিল ওই সেই আঁচড়ের দাগের ওপরে একটু আঙ্গুল বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, কেন করতে গিয়েছিলে? একবার যদি কোনভাবে সেই শয়তান পার্থকে হাতে পায় তাহলে সরবাগ্রে ধর থেকে মাথা আলাদা করবে তারপরে সেই কাটা মাথাকে প্রশ্ন করবে, কেন ওর ঝিনুকের হৃদয় এইভাবে ভেনে টুকরো টুকরো করে দিয়েছিল। জীবনের অর্থ কি শুধু মাত্র টাকা আর শরীর? সময় স্তব্দ হয়ে গিয়েছিল ওদের চোখের তারার মাঝে। বিয়ের দিনের সেই শুভ দৃষ্টি এতদিন পরে এই ফাঁকা ঘরের মধ্যে আলমারির সামনে হয়।
 
শালিনী এতক্ষন দরজায় দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করছিল, ঝিনুকের লাজুক অপ্রস্তুত হাসি আর রিশুর লজ্জা দেখে একটু অবাক হয় সেই সাথে দুই আনকোরা কপোত কপোতীকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে বলে ওঠে, “পুরো রাত কি এখানেই দাঁড়িয়ে টুকুর টুকুর করবে নাকি?”

শালিনীর গলার আওয়াজ পেয়ে রিশু ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে ওর কান আলতো টেনে বলে, “তু বহত বদমাশ হো গ্যায়ি হ্যায়। (তুমি ভীষণ বদমাশ হয়ে গেছ।)”
 
রিশু নিজের জামা কাপড় নিয়ে স্নান করার জন্য বাথরুমে ঢুকে পরে। অন্যদিনের মতন বাথরুমের রডে ঝিনুকের ভিজে জামা কাপড় দেখে মনে মনে হেসে ফেলে, ঝিনুক না হয়ে প্রজাপতি নাম হলে মনে হয় ভালো হত, সারাদিন মনে হয় গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই কয়দিনে ঝিনুকের জড়তা ভাব অনেকটাই কেটে গেছে, সকালে বারান্দায় দাঁড়িয়ে মুচকি হাসি দিয়ে হাত নাড়ায়, বিকেলে বাড়ি ফিরলে আর ওর হাত থেকে এপ্রন অথবা ব্যাগ নেওয়ার জন্য হাত বাড়ায়না, নিজের পরিধি সম্পর্কে ভালো ভাবেই সচেতন। এই কয়দিনে বাড়িতে শুধুমাত্র বাড়িতে বসে থাকার ফলে ঝিনুকের শরীরে একটু গোলগাল হয়ে গেছে, গাল দুটো বেশ ফুলোফুলো লাল রঙের শিমলার আপেলের মতন মিষ্টি। শুরু থেকেই জানত যে ঝিনুকের পোশাক আশাক অনেক খোলামেলা, আগে তেমন দেখতে ইচ্ছে করত না তবে আজকাল না চাইতেও চোখ চলে যায় ঝিনুকের দিকে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেই ঝিনুক পায়ের তোড়া বেশি করে নাড়িয়ে বাজিয়ে ওর সামনে ঘোরাফেরা করে ওর নজর কাড়ার জন্য সেটা বুঝতে অসুবিধে হয় না। রাতের খাওয়ার পরে যখন সারা বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে যায়, রিশু নিজের ঘরে ঢুকে পরে পড়াশুনা করার জন্য তখন যেন বেশি করে ঝিনুকের এদিক ওদিক চলাফেরা করা চাই। মাঝে মাঝে বই থেকে মাথা উঠিয়ে দেখে, রাতেই যেন ওর সব কাজ মনে পরে, বারান্দা থেকে আগের দিনের শুকনো জামা কাপড় ভেতরে নিয়ে আসা চাই, খাওয়ার টেবিল গোছান চাই, সোফায় আধাশোয়া হয়ে টিভি দেখার সময়েও বারেবারে নড়া চড়া করা চাই, যেন ইচ্ছে করেই করে যাতে ওর কানে নুপুরের নিক্কন বারেবারে প্রতিধ্বনিত হয়। স্নান সেরে বেড়িয়ে নিজের জামা কাপড় পরে তৈরি হয়ে নেয় রিশু। শোয়ার ঘরের দরজা তখন বন্ধ, শালিনী আর ঝিনুক ঘরের মধ্যে নিশ্চয় সাজতে ব্যাস্ত।
 
ইন্দ্রজিত ওর কাঁধ চাপড়ে জিজ্ঞেস করে, “কি রে সব ঠিক ঠাক?”

মৃদু হেসে উত্তর দেয় রিশু, “হ্যাঁ, সব ঠিকঠাক, কি আর হবে।”

ইন্দ্রজিত মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করে, “হানিমুনে কোথায় যাচ্ছিস?”

মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, এখন পর্যন্ত সেই অর্থে কাছাকাছি আসতে পারেনি, “দেখি কবে ছুটি পাই তারপর। পরের মাসে আবার লন্ডন যাওয়ার আছে, সেমিনার আছে।”

চোখ টিপে ইন্দ্রজিত ওকে বলে, “সাথে নিয়ে যা, কি আছে। সেমিনার ও হবে আবার হানিমুন ও হয়ে যাবে।”

সেই বিষয়ে ভেবেছিল তবে আলোচনা করা হয়নি ঝিনুকের সাথে, তাই মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ দেখি কি হয়।” একটু থেমে জিজ্ঞেস করে, “সত্যি বলত আজকের এই ডিনার পার্টিতে কে কে আসছে?”

ইন্দ্রজিত উত্তর দেয়, “এই হোটেলের ম্যানেজার, সুজিত গোরবোলে, শালিনীর চেনা শোনা। ওর স্ত্রীর পক্স হয়েছিল, প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়েছিল, সাড়ে ছয় মাসে সিজেরিয়ান করতে হয়েছিল না হলে মা মেয়ে কাউকেই বাঁচানো সম্ভব ছিল না। মোটে সাড়ে ছয়শ গ্রাম ওজনের তিন মাস পুরো ইঙ্কিউবেটরে ছিল, বিশেষ করে বাচ্চাটাকে নিয়ে যমে আর ডাক্তারে টানাটানি। সেই থেকেই শালিনীকে খুব মানে, বলতে পারিস ভগবানের মতন।”
 
বেশ কিছু পরে ঝিনুককে সঙ্গে নিয়ে শালিনী ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। ঝিনুকের সাজ দেখে বিস্মিত হয়ে যায় রিশু, জিনসের পরিবর্তে পরনে একটা চওড়া পাড়ের ওয়াইন রেড রঙের শাড়ি, চওড়া আঁচলখানি রুপোলি সুতোর কাজে ভর্তি। আশা করেনি যে ঝিনুক এই সাজে সাজবে। ফর্সা কপাল আর দুই বাঁকা ভুরুর মাঝে ছোট একটা লাল টিপ, চোখের পাতা গুলো বেশ লম্বা আর চোখের পাতার ওপরে আবছা লালচে রঙের আইশ্যাডো। ঠোঁটে গাড় বাদামি রঙ্গে রঞ্জিত, কোমল গাল দুটো পিচ ফলের মতন লালচে, মরালী গর্দানে সজ্জিত একটা সুন্দর সোনার হার, দুই হাতে বেশ কয়েক গাছা সোনার চুড়ি আর সাথে সোনায় বাঁধানো শাঁখা পলা। হারের লকেট দুই পিনোন্নত স্তন যুগলের মাঝে আটকে পরে গেছে। দুই কানে দুটো ঝুমকো দুল। পরনের লাল রঙের ব্লাউজ অতীব আঁটো হয়ে স্তন জোড়ার আকার অবয়াব অতীব নিখুঁত ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছে। ডান কাঁধের ওপরে একটা শাল আর হাতে একটা জ্যাকেট। পাতলা ঠোঁটের মিষ্টি লাজুক হাসি দেখে চোখ আটকে যায় রিশুর। মাথার চুল একপাশে করে আঁচড়ান আর পেছনে একটা খোঁপার মতন করে বেশ সুন্দর করে বাঁধা।
 
শালিনী ঝিনুককে পেছন থেকে আলতো ধাক্কা মেরে রিশুর পাশে দাঁড় করিয়ে দিয়ে হেসে বলে, “এইবারে একদম হর পার্বতী মনে হচ্ছে। এই একটু পাশাপাশি দাঁড়াও একটা ফটো তুলি।”
 
হটাত করেই ধাক্কা খাওয়ার ফলে ঝিনুকের কোমল উষ্ণ সুডৌল স্তন জোড়া ভীষণ ভাবেই রিশুর উপরি বাজুর সাথে পিষ্ঠ হয়ে যায়। নিজেকে সামলানোর জন্য রিশুর বাজু আঁকড়ে ধরে ঝিনুক। কোমল চাঁপার কলি আঙ্গুলের স্পর্শে ওর হাতের ওপরে হাত রেখে সামলে নেয় ঝিনুককে। হটাত করেই এইভাবে ধাক্কা খাওয়ার ফলে লজ্জায় ঝিনুকের কান লালিমা রঞ্জিত হয়ে ওঠে। ঝিনুকের চোখ নেমে আসে ওর বুকের ওপরে, রিশুর দিকে তাকানোর মতন শক্তি ছিল না তার ওপরে আবার সামনে শালিনী আর ইন্দ্রজিত দাঁড়িয়ে। নব বিবাহিতা স্ত্রীর লাজে রাঙ্গা রক্তিম চেহেরা দেখে নিজেও ভীষণ ভাবেই লজ্জিত হয়ে পরে রিশু, পারলে এখুনি যেন ওকে বুকের মাঝে লুকিয়ে ফেলে।
 
ইন্দ্রজিত হাসিতে ফেটে পরে, “ইসসস কি লজ্জা দেখো ঝিনুকের।”

রিশু মৃদু হেসে ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে, “তুই থামবি নাকি এখানেই আমরা দাঁড়িয়ে থাকব?”

শালিনী মোবাইলে ওদের কয়েকটা ছবি তোলার পরে হেসে বলে, “চল চল বেড়িয়ে যাক না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।”
 
গাড়িতে ওঠার আগে গায়ে জ্যাকেট পরে নেয় ঝিনুক, ঠান্ডা হয়ত সহ্য হয়ে যেত কিন্তু রিশুর দিকে তাকিয়ে ওর অনুল্লেখিত আদেশ বুঝতে অসুবিধে হয় না। ওর ঠান্ডা লাগুক অথবা কোন প্রকার কষ্ট হোক সেটা রিশু কোনমতেই চায়না। বাইকে বসলে বসার আগেই ওকে কানে মাথায় শাল জড়িয়ে বসতে হয়। ইন্দ্রজিত নিজের গাড়ি আনেনি সুতরাং উবের ক্যাবে করেই ওদের হোটেলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হয়। সামনের সিটে ইন্দ্রজিত আর পেছনের সিটে ঝিনুককে মাঝখানে বসিয়ে দুইপাশে রিশু আর শালিনী। বিয়ের দিন ভোররাতে বাড়ি ফেরার সময়ে এইভাবে পাশাপাশি বসেছিল ওরা তারপরে আর কোনদিন এইভাবে পাশাপাশি বসা হয়নি ওদের। রিশুর পায়ের সাথে মাঝে মাঝেই ঝিনুকের পা লেগে যাচ্ছিল, সিট ছোট হওয়ার ফলে চেপে বসতে হয়েছিল ওদের যার ফলে ঝিনুক আরো বেশি করেই রিশুর গায়ের দিকে সরে এসেছিল। রিশু ইচ্ছে করেই সিটের পেছনে বাঁ হাত উঠিয়ে দিয়ে ঝিনুকের বাম কাঁধের গোলের ওপরে আলতো করে ধরে রেখেছিল। কাঁধের সেই স্পর্শ যদিও জ্যাকেট ভেদ করে ঝিনুকের ত্বকে পৌঁছায়নি তাও ঝিনুকের মনে হয়েছিল যেন রিশু ওকে আঁকরে ধরে রয়েছে বুকের কাছে। খুব ইচ্ছে করছিল সেই অন্ধকার ক্যাবের পেছনের সিটে রিশুর চওড়া বুকের ওপরে মাথা রেখে চোখ বুজে হৃদস্পন্দন শোনার। সেই প্রবল ইচ্ছেটা অতি কষ্টে দমন করে কোলের ওপরে হাত রেখে চুপচাপ বসে ছিল। বুকের ভেতরে এক অদ্ভুত অনুভুতি, শেষ গন্ডি উলঙ্ঘন করার এক প্রবল প্রবৃত্তি জেগে ওঠে রিশুর বুকের মাঝে। মাঝে মাঝেই ঝিনুকের মাথা ওর প্রায় নাকের পাশে এসে যায় সেই সাথে ঝিনুকের গায়ের মিষ্টি গন্ধে ওর নাক ভরে ওঠে।
 
গাড়িতে বসে ঝিনুকের কানে ফিসফিস করে জিজ্জেস করে রিশু, “হটাত শাড়ি পড়তে গেলে? বলছিলে যে জিনস পড়বে?”

কাঁধের ওপরে রিশুর আঙ্গুলের চাপ অনুভব করতেই বুকের মাঝের ধড়ফড়ানি বেড়ে ওঠে ঝিনুকের। হটাত করে এইভাবে জিজ্ঞেস করবে সেটা ভাবতে পারেনি, কথা বলতে গিয়ে গলা অবশ হয়ে আসে ওর। কোনমতে সেই অনুভুতি সামলে উত্তর দেয়, “ওই এমনি।” ভীষণ ভাবেই জানতে ইচ্ছে করছিল যে ওকে কেমন দেখতে লাগছে।
 
কানের কাছে মাথা নামিয়ে আনার ফলে ঝিনুকের শরীরের মাদকতাময় ঘ্রাণ ওর নাকের মধ্যে প্রবেশ করে ওর মাথার মধ্যে তান্ডব শুরু করে দেয়। গাড়িতে অন্য কেউ না থাকলে ড্রাইভারকে হয়ত বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আদেশ দিত রিশু। ঠোঁট জোড়া ভীষণ ভাবেই ওকে কাছে ডাকছে, ভীষণ মায়াবী আঁখি জোড়া ওর দিকে দেখেও দেখতে পারছে না লাজে। একবার মনে হয়েছিল, গায়ের সব শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। নিঙরে পিষে একাকার করে ফেলে তন্বী তরুণী উদ্ভিন্ন যৌবনা স্ত্রীকে। শাড়ি পরিহিত ঝিনুককে যত দেখে তত বেশি মুগ্ধ হয়ে যায় রিশু, বিয়ের দিনে ঠিক ভাবে তাকিয়ে দেখেনি তারপরে যতবার দেখেছে ততবার ঝিনুক সালোয়ার কামিজ পরেছে।
 
ঝিনুকের কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলে, “শাড়ি পড়বে সেটা সত্যি ভাবতে পারিনি। ভীষণ সুন্দরী লাগছে তোমাকে...” সেই বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে আর চোখ ফেরাতে পারছে না।

প্রেমের বারিধারায় ঝিনুকের চোখ জোড়া ঝাপসা হয়ে যায়।

মাত্র দু হাজার শব্দের ঝলকানিতে মনেতে কারেন্ট লাগিয়ে পালিয়ে গেলো ! একটু বেশি হলে ক্ষতি কি ছিল শুনি ?
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 18-10-2020, 01:30 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:16 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 03:41 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 21-10-2020, 04:13 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 22-10-2020, 02:49 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 27-10-2020, 02:59 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 12:21 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 28-10-2020, 10:20 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 29-10-2020, 01:29 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 30-10-2020, 11:22 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 01-11-2020, 01:37 AM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by TheLoneWolf - 02-11-2020, 12:51 PM
RE: শেষের পাতায় শুরু - by dada_of_india - 28-11-2020, 08:14 PM
পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 08-12-2020, 05:19 PM
RE: পর্ব আট – (#2-38) - by pinuram - 09-12-2020, 06:58 PM
Block Guest Users! - by pinuram - 09-12-2020, 11:47 PM
RE: Block Guest Users! - by dreampriya - 10-12-2020, 09:46 AM
RE: Block Guest Users! - by pinuram - 10-12-2020, 12:18 PM
পর্ব আট – (#6-42) - by pinuram - 14-12-2020, 11:37 PM
পর্ব আট – (#7-43) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM
পর্ব আট – (#8-44) - by pinuram - 14-12-2020, 11:38 PM



Users browsing this thread: 23 Guest(s)