Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ঝর্ণা The Untold story ! সমাপ্ত
বাইকে স্টার্ট দিয়ে হাওয়ায় উড়তে উড়তে আমি পিসির বাড়ি পৌঁছে গেলাম ! বাইকের আওয়াজ পেয়ে মঞ্জুই দরজা খুলে দিলো ! আমি মঞ্জু কে উড়িয়ে ধরে সজোরে একটা চুমু খেলাম ! ঘর ঢুকে পিসিকে প্রণাম করলাম ! পিসি আমার মুখে একটা রসগোল্লা ঢুকিয়ে দিয়ে বললো "এটা  মঞ্জুর পাশের তোর টা যেদিন আসবে সেদিন পেট পুরে রসগোল্লা খাওয়াবো ! "
আমি মঞ্জু কে বললাম "তৈরী হয়ে নে  ! তৃপ্তিদির বাড়ি যাবো ! "
মঞ্জুর মুখ আবার গম্ভীর হয়ে গেলো ! চোখের কোণে জলের ঝিলিক ! আমি মঞ্জু কে বললাম " দেখ যে গেছে তাকে তো ফিরিয়ে আনা  যাবে না ! যে আছে তাকে তো বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে ! "
ঘরে ঢুকে মঞ্জু তৈরী হয়ে এলো ! বাইকের পিছনে বসে পড়লো ! তৃপ্তিদির বাড়ি গিয়ে দেখি বেশ কিছু মজুর লেগে রয়েছে ! সমস্ত বাড়িটাকেই একরকম ভাঙা হচ্ছে বলা যায় ! কমলদা গম্ভীর হয়ে সমস্ত তদারকি করছেন ! আমাদের দেখে একটা বিষন্ন হাসি দিয়ে বললেন "আয়  ! মঞ্জুর পাশের খবর পেয়েছি ! "
- কিন্তু বাড়ি কেন ভাঙছো ?
- তৃপ্তির ইচ্ছা ছিল মা হবার ! আমারও  তো ইচ্ছা ছিল বাবা হবার ! আমাদের সেই সাধ পূরণ হলোনা ! তাই এই বাড়িটাকে একটা অনাথ আশ্রম করবো ! কত ছোট ছোট বাচ্ছার কলতানে এই বাড়ি ভোরে থাকবে ! তৃপ্তিও মা হবে আর আমিও বাবা হবো !
আমাদের মুখ থেকে কোনো কথাকে বেরুলোনা ! চুপচাপ কিছুক্ষন বসে থেকে আমরা বেরিয়ে এলাম ! তৃপ্তিদিকে কথা দিয়েছিলাম যতদিন না নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছি ততদিন আমি মঞ্জুকে টাচ করবো না ! মঞ্জুকে বাড়িতে ছেড়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি ফিরে এলাম ! সন্ধ্যে বেলায় লাহিড়ীদা ফোন করে অভিযোগ করলেন " আমি কমলদার বাড়ি গিয়েও ওনার সাথে কেন দেখা করিনি ! আমি বললাম কমলদাকে  দেখার পর মুড্ খুব অফ হয়ে গেছিলো তাই আর দেখা করা হয়নি ! তখন লাহিড়ীদা বললেন কমলবাবুর  সাথে ওনার অনাথ আশ্রম গোড়ার কাজে আমিও আছি ! শুনে খুব ভালো লাগলো !

দিন চারেক পরে আমাদের রেজাল্ট বেরুলো ! এতো ভালোও রেজাল্ট যেটা আমার আশাতীত ছিল ! সবাই খুশি ! একবার পিসি, পিসেমশাই, মঞ্জু সবাই আমাদের বাড়িতে এলেন খুব হৈ হুল্লোড় হলো ! কিন্তু আমার কোথায় যেন একটা তাল কেটে গেছে তাই আমি মন খুলে সেই আনন্দে যোগ দিতে পারলাম না !
ধীরে ধীরে জয়েন্টের রেসাল্ট বেরুলো ! সেখানেও আমি ভালো ফল   করলাম ! আমি ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ চান্স পেয়ে গেলাম হায়দরাবাদে ! ততদিনে মঞ্জু কলেজে ভর্তি হয়ে গেছে !  বাবা আর আমি একবার হায়দরাবাদে গিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা করে এলাম ! জুন এর ১৫ থেকে আমাদের কলেজ শুরু হবে ! তার মানে আমাকে ১২ জুন গিয়ে কলেজে রিপোর্ট করতে হবে ! সেই মতোই টিকিট কাটা হয়ে গেলো ! বাবা, মা, পিসি সবাই খুব উৎকণ্ঠায় ! জীবনে প্রথম ৩ বছরের জন্য বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও পড়তে যাবো ! সবাইকে বোঝালাম ! যাবার আগের দিন আমাদের বাড়িতে লাহিড়ীদা, ঘোষ দা, কমলদা সবাই এলেন ! কমলদার শরীরে সেই জৌলুস আর নেই ! কোথায় যেন প্রদীপ নিভে গেছে ! মুখেতে একটা ম্লান হাসি ! সবাই আমাকে উপদেশ দিলেন ! রাতের বেলায় মঞ্জুকে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে বললাম "যাচ্ছি তোমার আর আমার ভবিষ্যৎ বানাতে ! " অপেখ্যা কোরো  ! আমি তোমার কাছেই  ফিরে আসবো  ! ( ঠিক তখনি একটা পুরানো গান খুব মনে পরে গেলো "আমি তোমার কাছেই ফিরে আসবো  ! তোমায় আবার ভালোবাসবো ! তুমি কি ডাকবে মোরে  ! চেনা সে নামটি ধরে ! )
পরেরদিন সবাই আমাকে বিদায় জানাতে হাওড়া স্টেশনে হাজির ! ঝর্ণা কেঁদে যাচ্ছে ! আমি ঝর্ণার কাছে গিয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম "আজ থেকে তোকে আর কেউ ডিস্টার্ব করবে না ! ভালো থাকিস ! বাবা মায়ের যত্ন নিস্ ! " ঝর্ণা এই প্রথম আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো ! কাঁদতে কাঁদতে মঞ্জুও এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো ! ঝর্ণা আর মঞ্জুকে জড়িয়ে ধরে আমিও কেঁদে ফেললাম !
- এই পাগল গুলোকে নিয়ে আর পারা  যাবে না ! সব সময় এদের চোখের কল খোলা ! শুধুই কেঁদে যায় ! আমাকে দেখে শেখ ! আমি এখন আর কাঁদিনা ! কমলদা বললেন কিন্তু নিজের চোখের জল নিজেই রুখতে পারলেন না !
গাড়ির সময় হয়ে গেছিলো ! বাবা আমাকে তারা দিলেন " উঠে পর ! সিগন্যাল হয়ে গেছে ! গাড়ি ছেড়ে দেবে ! আমি ওদের ছেড়ে গাড়িতে উঠতে যাবো কিন্তু ঝর্ণা আমাকে ছাড়তে চাইছে না ! বাবা ঝর্ণা কে একটা ধমক দিলেন " এই ঝর্ণা ! কি হচ্ছে ? ও কি একেবারে বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাচ্ছে নাকি ? ও তো পড়তে যাচ্ছে ! ছাড় ওকে !
বাবার ধমক খেয়ে কাঁদতে কাঁদতেই ঝর্ণা আমাকে ছেড়ে দিলো ! সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মা,পিসি, মঞ্জু ঝর্ণা ! সবার চোখেই জল ! গাড়ি ছেড়েদিলো ! কাঁদতে কাঁদতে সবার দিকে হাত নাড়াতে থাকলাম ! কখন যে সবাই চোখের আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না ! ট্রেন ভালোই স্পিড নিয়েছে !
দরজা বন্ধ করে নিজের সীটে এসে বসলাম ! কিছুক্ষনের মধ্যেই টিটি  এসে হাজির ! আমার টিকিট দেখে বললেন " ও তুমিই সুনন্দ ! লাহিড়ীদা তোমার কথা আমাকে বলে দিয়েছেন ! আমিও হায়দরাবাদে থাকি ! কোনো অসুবিধা হলে আমাকে জানাবে ! " ভালো ছেলের মতো আমি ঘাড় নাড়লাম ! উনি বললেন সমস্ত টিকিট চেক করে আমি আসছি ! তখন কথা হবে ! আমি শুধু লাহিড়ীদার দূরদর্শিতার কথা ভেবে অবাক হলাম !
ঘন্টা খানেক পরে টিটি  সাহেব ফিরে এলেন ! কি হলো বসে আছো ? ডিনার  করবে না ?
- করবো ! একটু পরে খেতে ইচ্ছা নেই !
- প্রথম প্রথম একটু মন খারাপ হবেই ! পরে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে ! কথায়  কথায়  জানতে পারলাম ভদ্রলোকের নাম  সুভাষ ব্যানার্জী ! ছেলে হায়দরাবাদে চাকরি করে ! মেয়েও এইবার হায়দরাবাদ আই আই টি তে ইন্সট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছে ! ছেলের চাকরির সুবিধার জন্যই  উনি হায়দরাবাদে সেটেল হয়েছেন ! আমাকে ওনার বাড়িতে আসতে নিমন্ত্রণ জানালেন ! এটাও বললেন যে লাহিড়ী দা ওনার সাথে কলেজে পড়তেন ! খুব ভালো বন্ধু ওরা  !
বুঝলাম লাহিড়ীদা এখানেও আমার জন্য ভেবে রেখেছেন !
গল্প করতে করতেই রাতের খাবার খেয়ে নিলাম ! আমার সিট ছিল আপার  ! সেখানে উঠে শুয়ে পড়লাম !
দুটোদিন রাস্তার শোভা  আর নানা রকম লোকের যাওয়া আসা দেখতে দেখতেই কেটে গেলো ! সন্ধ্যেবেলায় যখন হায়দরাবাদ পৌঁছলাম তখন সুভাষ বাবু এগিয়ে এলেন ! " এই সন্ধ্যে বেলায় তো তোমাকে হোস্টেলে ঢুকতে দেবে না ! তার থেকে বরণ  তুমি আমার বাড়িতে চলো !   ! রাতে আমার ওখানেই থেকে যেও ! কাল সকাল বেলায় কলেজে গিয়ে রিপোর্ট করো !
[+] 5 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ঝর্ণা The Untold story ! - by dada_of_india - 22-11-2020, 12:47 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)