Thread Rating:
  • 131 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮)
আজ শেষ দিন।কালই ফিরবে তারা।রঞ্জন বটুকাকার সাথে গল্প করছিল।কথায় কথায় রঞ্জন বলল---বটুকাকা আচ্ছা কানু দা কোথায়?
নামটা শুনে বটুকলাল গম্ভীর হয়ে গেলেন।এড়িয়ে গিয়ে বললেন---ছোটবাবু আবার কবে আইসবে? দাদুভাইর তো ভালো লেগে গেছে জায়গাটা?
রঞ্জন একটু অবাক হল।সত্যি সেই কবে ক্লাস সিক্সে কানু দা'কে শেষ দেখে ছিল।চুরির দায়ে অভিযুক্ত হবার পর আর কোনো দিন কানুদার কথা সে না বাবা-মা, না বটুকাকা; কারোর মুখে শোনেনি।

ব্যাগ গোছাচ্ছিল সুছন্দা।বটুকাকা ফরেস্টের গাড়ী ডাকতে গেছে।রঞ্জন বটুকাকার ঘরটার কাছে এসে বারান্দায় বসল।বটুকাকার ঘরের দেওয়ালে একটা পট আঁকা আছে।প্রচন্ড শিল্পীসত্বা না নিয়ে জন্মালে এমন আঁকা যায় না।রঞ্জন দেখল একটা জায়গায় ছোট করে ইংরেজিতে লেখা আছে 'Sukhen'।চমকে গেল রঞ্জন।ভাবল সুছন্দাকে ডেকে দেখাবে।তারপর ভাবল না থাক।যে প্রেমিককে সুছন্দা কখনো দেখেনি, এতদিন পর তাকে চিনিয়ে লাভ নেই।
সুখেনকে চিন্তে পেরেছে রঞ্জন।কানু দা'ই সুখেন।এটা চিনতে তার বাকি নেই।
******

রঞ্জন ইংরেজি কবিতার বইটা ধরে দাঁড়িয়ে আছে।তার মানে সুছন্দা সুখেনকে অর্থাৎ কানু দা'কে চিনতো!!! আসলে চিঠি গুলো সবই পড়ত সুছন্দা।কিন্তু সুছন্দা কোনো প্রত্যুত্তর দিত না কেন?

কেমন গুলিয়ে যাচ্ছিল রঞ্জনের!সুছন্দা যদি চিনতো তবে রঞ্জনের কাছে চেপে গেল কেন? কেন সেদিন বলেছিল---"কে সুখেন?"

আলিপুদুয়ার থেকে ঘুরে আসার পর রঞ্জন ভুলেই গেছিল কানু' দা'র কথা।কিন্তু আজ যেন নতুন করে তার অনুসন্ধিৎসা জাগিয়ে তুলল।

অর্ক ফিরেই বলল---বাপি আজ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আর চেন্নাই সুপার কিংসের খেলা আছে।

রঞ্জন অন্যমনস্ক ছিল।নিজের স্ত্রীর এই হতভাগা প্রেমিককে জানার রহস্য তাকে পেয়ে বসেছে।বলল---কাল আলিপুরদুয়ার যাবি?
--কাল? অর্কের চোখ চকচক করে উঠল।
---হ্যা, তোর মাকে রাজি করাতে হবে।

সুছন্দা অফিস থেকে আজ তাড়াতাড়িই ফিরল।রঞ্জন অর্ককে ইশারা করল।অর্ক বলল---মা,কাল আমরা আলিপুরদুয়ার যাচ্ছি।
----মানে??
---হ্যা সুছন্দা, তুমিও চলো।তুমি না গেলে বাপ-ছেলেতেই যাবো।এই ছুটিগুলো নষ্ট করা যাবে না।
অর্ক ভেবেছিল মা রাজি হবে না।রঞ্জনও তাই ভেবেছিল।সুছন্দা একটু নারাজ হয়ে বলল---আমি একা একা থাকব?
---কেন তুমিও চলো।
---আমার একদম এখন হবে না।ঠিক আছে তোমরা যাও।কিন্তু সাবধানে তোমরা দুজনেই যে কি করে বসো কখন।

রঞ্জন হেসে বলল---তাহলে কাল আমরা যাচ্ছি?
অর্কও খুব খুশি।
*******
মাত্র ছ'মাস আগে আলিপুরদুয়ার ঘুরে গেছে তারা।অর্কর কাছে তবুও জায়গাটা নতুন।জলদাপাড়া পৌঁছল যখন ওরা বটুকলাল খুশি হয়ে বলল---ছোট বাবু আপনি?
----হ্যা বটু কাকা, তিন চারদিন কাটিয়েই যাবো।
----বৌমনি কোথায়?
---ও আসেনি ওর অফিস আছে।
---ঠিক আছে ছোটবাবু আমি ঘর খুলে দিচ্ছি।টোটোপাড়ার ঘনার বউকে বলে দিচ্ছি।রেঁধে দিয়ে যাবে।

সুছন্দা যেভাবে ঘর গুছিয়ে দিয়ে গেছিল ঠিক একই রকম আছে ঘরটা।অর্ক বলল---বাবা তোমার ছোটবেলাটা বেশ কেটেছে, আমার তো এখানে থেকে যেতেই ইচ্ছে করে।
রঞ্জন বলল--এখানে কিন্তু আইপিএল দেখতে পাবি না, ইলেকট্রিক নেই।
---জানি তো।সেজন্যই ভালো লাগে।

রঞ্জন খুশি হল।তার ছেলেটা কলকাতায় মানুষ হয়েও যা হোক নাকউঁচু হয়নি।

টোটো পাড়ার একটা আদিবাসী বউ এসে রেঁধে দিয়ে গেল।এধার ওধার রঞ্জন আর অর্ক ঘুরে এলো।মাঝে সুছন্দা ফোন করে জেনে নিল তারা ঠিকঠাক পৌঁছেছে কিনা।

রাতে অর্ক ঘুমিয়ে পড়তে রঞ্জন বাইরে বেরোলো।জঙ্গলের রাতটা তার বড় ভালো লাগে।
বটুকলাল দাওয়ায় বসে আছে।রঞ্জন এগিয়ে গেল।বটুকলাল দাওয়ায় মাদুর পেতে দিল।বলল---বসেন ছোটবাবু।
---বটু কাকা এখানে একা একা থাকেন কখনো কোনো বিপদ হয়না?
---সে আর কি বিপদ ছোটবাবু...এখন কি আর আগের মত পশু পাখি আছে।তবে এক আধবার চিতা ধরা পড়ে বৈকি।তোমার মনে আছে ছোটবাবু বড় সাহেব একবার বাঘের বাচ্চা ধরে...
রঞ্জন কথা শেষ না করতে দিয়েই বলল---কানু দা কোথায়?
বটুকলাল আবার এড়িয়ে গিয়ে বলল---কাল হাতির পাল ঢুকে পড়েছিল...
----কাকা কানু দা এখন কোথায় থাকে?
বটুকলাল আর এড়াতে পারলেন না।বললেন---কে কানু?
---আপনি নিজের ছেলে ভুলে গেলেন বটু কাকা?
বটুক গম্ভীর হয়ে গেল।বলল---সে কি আমাকে কখনো বাপ মনে করছে?
---সে এখন কোথায়?
---আসে মাঝে মধ্যে।দিন চার পাঁচ থাকে।পাহাড় জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায় তারপর আবার কোথায় চলে যায়।নির্লিপ্ত ভাবে বটুকলাল বলল।
---সুছন্দার দাদুর বাড়ীতে কানু দা থাকে না?
বটুকলাল চমকে উঠল---তুমি কি কইরে জানলে ছোটবাবু?
---আমি জানি বটুকাকা, কানু দা'কে আমার বেশ মনে আছে, পাহাড়ে চড়া, গাছে চড়া সব কিছুতেই ওস্তাদ ছিল।তারপর সেই ফরেস্ট অফিসে চুরি...
বটুকের চোখ ভিজে গেল বলল---তোমার মনে আছে ছোটবাবু? তুমি তখন দশ বারো।বটু তোমার চেয়ে অনেক উঁচু কেলাসে পড়ত।চুরি করল, বড়সাহেব মারলেন।স্কুলে পাঠালুম তারপরও বড় সাহেবের কথা শুনে।বড় সাহেব বড় ভালোবাসত তাকে।বাসবেই না কেন? কানু পড়াশুনা, খেলাধুলা সবেতেই পরথম হত যে!
---তারপর?
---ইস্কুলে সবাই খ্যাপাতে লাগল,'চোর চোর' বলে।ছোট বাচ্চারও ছাড়ত না তাকে।কেষ্ট বলে একটা ছেলে পড়ত কানুর সাথে।কানুকে খ্যাপালো।কানুর গতর সবসময়ই বেশি।একদিন বেদম মারল ছেলেটাকে।বড় সাহেবের কাছে কমপিলেন আইল।বড় সাহেব পাঠিয়ে দিল হোস্টেলে, দিনাজপুর।
---তারপর কি হল?
---কানু আসতে চাইত না ইখানটা।এলো সেই কলেজ পাশ করে।তখন কানু কেমন বদলে গেছে।একা দরজা বন্ধ করে থাকত।বৌমনির দাদু ফণীভূষণ মুখুজ্জে পন্ডিত মানুষ।তাকে পছন্দ করত।কিসব পন্ডিতদের কথা, পড়া লেখার কথা আলোচনা করত তারা।কানু ছবি আঁকত, ফনি বাবুর ঘরে।তারপর একদিন আচমকা কানু নিরুদ্দেশ হয়ে গেল!
---ফিরল কবে?
---দশ বছর পর।তখন মাথার ছিট হইছে!ফনিবাবু তখন মরণ শয্যায়।কানুকে দেখতে পেয়ে খুশি হলেন।বললেন কানু যেন আর কোথাও না চলে যায়।তারপর ফনি বাবুর মৃত্যুর পর কানু এই বাড়ীতে আসতে লাগল।দুমাসে, একমাসে ইচ্ছা হলে আসে।নেশা ভাঙ করে।জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়।আবার কোথায় চলে যায়।
---কোথায় চলে যায় কানু দা?
----সে বলতে পারবনি ছোটবাবু।পার্থকে মনে আছে কানুর সাথে পড়ত? সে বলতে পারবে।
রঞ্জনের মনে পড়ল পার্থ দা, মাদারিহাটের স্কুলে পড়ত।কানুদার ব্যাচ।
---বলল হ্যা পার্থ দা, মনে আছে তো? সে এখন কি করে? কোথায় থাকে?
---ও তো এখন মাস্টার হয়েছে।মাদারিহাট ইস্কুলে।যে ইস্কুলে আপনি পড়তেন।শুধু আমার কানুটাই মাতাল, গাঁজাখোর হইল।


পরদিন সকালেই রঞ্জন মাদারিহাট বেরিয়ে গেল।রঞ্জন নিজেও জানে না কেন সে এত উৎসাহিত কানু দা'র ব্যাপারে।এজন্যই কি কানু দা তার স্ত্রীকে অন্ধ ভাবে ভালোবাসত বলে?

মাদারিহাটের স্কুলটা বদলে গেছে।এখন বিরাট সাজানো গোছানো।কিছুক্ষণ পর পার্থ সমাদ্দার এলো।পার্থ দা কে দেখে আগের পার্থ দা'র সাথে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।
পার্থও অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল রঞ্জনের দিকে।বলল---বলুন।
---আপনি পার্থ দা?
বেশ অবাক চোখে পার্থ বলল--হ্যা।আপনি?
---আমি রঞ্জন মৈত্র।ফরেস্ট অফিসার বিমল মৈত্রকে মনে আছে? তার ছেলে।
----ও হো হো হো! রঞ্জন? বড় সাহেবের ছেলে?
---ভালো আছো পার্থ দা?
--হ্যা তুমি?
---ভালো।
---এতদিন পর আলিপুরদুয়ারে?
---এলাম ছুটি কাটাতে।
---বাঃ ভালো করেছো।পৈত্রিক ভিটে ভুলে যাওনি তাহলে।বটুকাকার মুখে শুনেছিলাম তুমি তো কলকাতা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার।
---ওই আরকি।পার্থ দা একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
--হ্যা বলো?
---আচ্ছা কানু দা'কে মনে আছে? বটুকাকার ছেলে?
---সুখেন? মনে থাকবে বা কেন? দু-তিনমাস আগে বোধ হয় দেখলুম মুখ নীচু করে হেঁটে যাচ্ছে।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করব ভাবলাম কোথায় যাচ্ছিস।কিন্তু এত মদ গিলেছে! যাওয়া যায় না।
---আচ্ছা কানু দা পাগল হয়ে গেছে?
---পাগল? না, না, আসলে খুব প্রতিভাবান ছিল তো, নিজের জগতে থাকে।এমনিতে ও তো বরাবরই রগচটা, ইনট্রোভার্ট ধরনের।কিন্তু রঞ্জন, তুমি কানুর খবর নিচ্ছ কেন? ও মাতালের খবর কে রাখে?
---আসলে বটু কাকা বুড়ো হচ্ছে তো।ওর তো একমাত্র ছেলে।একটু যদি ছেলে কে বয়সে পায়।
হেসে উঠল পার্থ।বলল--কে কানু বটুকাকার দেখাশোনা করবে? ওর নিজেরই হাল যা।
---কেন ও তো খুব ভালো ছবি আঁকে শুনেছি।
---শুধু ছবি কেন, কবিতা লেখা থেকে পান্ডিত্যতে ওর ধারে কাছে লোক মেলা মুস্কিল।কিন্তু কি জানো কানুটা বড়ই হতভাগা।ছেলেবেলা থেকেই এমন।অল্প বয়সে বেশ দুঃসাহসী ছিল।তারপর চুরির দায়ে...
---আচ্ছা পার্থ দা, কানু দা কি সত্যি চুরি করেছিল?
---রঞ্জন, সেসব এত পুরোনো কথা।জেনে আর কি করবে?চুরিটা করেছিল নিরাপদ চক্রবর্তী।
---মানে আমাদের বাড়ীর পুরোহিত যিনি ছিলেন?
---হুম্ম।জাতপাতের বিষয় বুঝলে।তোমার বাবা-মা কানুকে নিজের ছেলের মত স্নেহ করতেন।নিরাপদ তা পছন্দ করতেন না।ব্রাহ্মণের বাড়ীতে শূদ্র ছেলের এত খাতির...সহ্য হত না।নিরাপদ বুড়ো তাই ফাঁসালেন।বড় সাহেব সব জানতেন।
------বাবা জানতেন! তাও?
----বড় সাহেবের কিছু করার ছিল না।সব প্রমাণ কানুর পক্ষে ছিল।হতভাগাকে বড় সাহেবই তো হোস্টেলে দিলেন পরে।শুনেছি ওখানেও ও ফার্স্ট হত।তারপর ফিরেও ছিল জলদাপাড়া...কিন্তু...
----কিন্তু কি পার্থ দা?
----ও কেমন একগুঁয়ে ছিল তো বরাবর, ফিরেও জলদাপাড়ার লোকগুলোর ওপর রাগ গেল না।একা থাকত ছবি আঁকত...মাঝখানে বড় সাহেব ওর প্রতিভা দেখে মাদারিহাটে একটা ছবি আঁকার স্কুল খুলে দিয়েছিলেন।কিছুদিন ছিলও ভালো।সেসময় আমার সাথে ক্যারাম খেলতে আসতো মাদারিহাট।শুনেছিলাম ও নাকি প্রেমে পড়েছে...ওয়ান সাইডেড লাভ।মেয়েটা নাকি ওকে পাত্তা দেয়না।

---মেয়েটাকে চিনতেন?
----না, ওর মত ইনট্রোভার্ট ছেলের কাছে এতটা আশা করা যায়না।এতটুকু জানতাম মেয়েটার বাড়ী জলপাইগুড়ি।মেয়েটার অন্য একজন প্রেমিক আছে।

রঞ্জনের নিজেকে দোষীও মনে হচ্ছিল আবার গর্বও হচ্ছিল।বেচারা কানু দা।রঞ্জন জানে মেয়েটি হল তার স্ত্রী সুছন্দা আর মেয়েটির প্রেমিক হল সে নিজেই।

পার্থ সমাদ্দার তখনও বলে গেলেন---তারপর হঠাৎ করে একদিন নিরুদ্দেশ।সকলে যখন ধরে নিয়েছে কানু মরে গেছে, প্রায় বছর দশেক পরে একদিন আচমকা হাজির।শুনেছিলুম কলকাতায় একটা বয়স্ক নোংরা মেয়েছেলেকে নিয়ে থাকত।এসব শোনা।মহিলা নাকি কানুর চেয়ে কুড়ি বছরের বড়।তারপর মহিলা মরতে তার বাড়ীটা কানুকে দিয়ে গেছে।ওই বাড়ীতেই থাকে ও।
----কানু দা কলকাতাতেই থাকে?
---হু, সেরকমই তো শুনেছি।কয়েকটা কাগজ, ম্যাগাজিনে ছবি আঁকে, কি একটা ছদ্ম নামে...।সেখান থেকে যা পয়সা পায় তাতেই ওর চলে যায়।
---কলকাতার কোথায় থাকে?
---একযাক্ট জায়গাটা বলতে পারব না, ওই কেষ্টপুরের দিকে।সে তোমাকে ছোট্টু বলতে পারবে।ছোট্টু বলে ওর এক সাগরেদ আছে।আমার অনুরোধে আমাদের এখানে একটা ম্যাগাজিনে ছবি এঁকে দিয়েছিল।ছোট্টুর হাতে পাঠিয়ে ছিল ছবিটা।
---ছোট্টুকে কোথায় পাওয়া যাবে পার্থ দা?
----ও তো কলকাতাতেই থাকে।দাঁড়াও নাম্বারটা আছে কিনা দেখি।
পার্থ সমাদ্দার মোবাইল ঘেঁটে বললেন---এই যে...
ফোন নম্বরটা নিয়ে, রঞ্জন যখন ওঠবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে পার্থ তখন বলল---যা করো না কেন রঞ্জন...কানুকে তুমি লাইনে আনতে পারবে না...বটুকাকার কথা ভাবলে সত্যিই কষ্ট হয়।

রঞ্জন ফিরে এলো।অর্ক বলল----বাপি কোথায় গেছিলে?
---একটু নিজের পুরোনো স্কুলটা দেখে এলাম রে।
পরের দুটো দিন বেশ কাটল রঞ্জন আর অর্কের।ফিরল তৃতীয় দিন।ফিরবার সময় বটুকলাল চোখ ছলছল করে বলল---ছোটবাবু কানুর খবর পেলেন?
--কেন বটুকাকা কানু দা তো এখানে মাঝে মধ্যে আসে?
---সে আইসত কিন্তু তিন মাস হল আসেনি কই।কি করি ছোটবাবু,নিজের ছেলেতো, সে যেমন হউক, মুখটাতো দেখতে পেতুম।পার্থ কিছু ঠিক-ঠিকানা দিল?
---হ্যা বটু কাকা ও কলকাতাতেই থাকে।
বটুকলাল রঞ্জনের হাত দুটো ধরে বলল---একবার দেখতে পেলে খবর দিয়েন।

বৃদ্ধ লোকটার দিকে তাকাতে পারছিল না রঞ্জন।অসহায় পিতার মুখটা দেখতে পাচ্ছিল সে।
ট্রেনে ফিরবার সময় রঞ্জন ভাবছিল সেদিনটার কথা।কানু দাকে চড় মারছিলেন বাবা, বটুকাকা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন মাথা নত করে।সেদিনই হয়ত কানুদার মন থেকে পিতার প্রতি দূরত্ব তৈরী হয়ে গেছিল।আর নিজের কাছের লোক তার বাবা, বড় সাহেব সবাই সেদিন কানুদার কাছে অপরাধী হয়ে গেছিল।নিজের লোকদের কাছে ঠকেই বোধ হয় কানুদা সুছন্দাকে এত বেশি ভালো ফেলেছিল।সুছন্দা তখন রঞ্জনের প্রেমিকা।দুই বাড়ী মোটামুটি এই সম্পর্কটা তখন বৈধতা দিয়ে দিয়েছে।সুছন্দা তখন রঞ্জনের বাড়ীতে আসতো যখন তখন।সুছন্দা হয়ত কানুদার চিঠিগুলো পড়ত কারণ কানুদার অসাধারণ কাব্যগুন।কিন্তু সুছন্দা ভালোবাসত রঞ্জনকে তাই কানু দা'র চিঠির কখনো উত্তর দেয়নি।আর যে লোকটিকে সে ভালো বাসেনি কোনোদিন আজকে তাকে চেনে বলাটা জরুরী নয় বলেই সুছন্দা রঞ্জনের কাছে কানু দা'কে চেনার ব্যাপারটা চেপে গেছে।

রঞ্জনের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে গেল জলের মত।নিজেরও একটা তৃপ্তি এলো।গর্ব হচ্ছিল সুছন্দার জন্য।সুছন্দা তাকে সব সময় ভালোবেসেছে, কানুদার এত কাব্যিক-রোমান্টিক চিঠিগুলো উপেক্ষা করে।কেবল বটুকাকার করুন মুখটা রঞ্জনকে ব্যথা দিয়ে গেল।সে ঠিক করল কানু দা'কে খুঁজে বের করে বটু কাকার কাছে পাঠাবে।

(চলবে)
[+] 11 users Like Henry's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮) - by Henry - 27-04-2020, 08:21 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)