Thread Rating:
  • 131 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮)
মোবাইলটা বাজল সাতটা নাগাদ।
---হ্যালো,আপনি সৌমিক চক্রবর্তী বলছেন।
---হ্যা বলুন।
--রামানন্দ চক্রবর্তী আপনার পিতা?
---হ্যা বলুন।চমকে গেল অর্ক।তার প্রয়াত পিতার কথা হঠাৎ কে জানতে চাইছে?
---আপনার কোনো কাকা আছে?
---কাকা? থমকে গেল সৌমিক।কাকা তার ছিল।সে কাকাকে সে কখনো দেখেনি।বাড়ীতে তাঁকে নিয়ে আলোচনাও কম হত।ঠাকুমার মুখেই অল্প শুনেছে তার কথা।কিন্তু সেই কাকা প্রসঙ্গে এখন কে জানতে চাইছে?
---কেন বলুন তো?
---শোভাবাজার থানা থেকে বলছি।এখানে একজন বসে আছে। তার নাম রাঘব চক্রবর্তী।
রাঘব চক্রবর্তী।হ্যা রাঘবই তো তার কাকার নাম।চমকে উঠল সৌমিক।
---হ্যা।রাঘব চক্রবর্তী।তিনি আমার বাবার ভাই হন।
---ও তবে ঠিক আছে।আপনি একটু থানা এসে তাঁকে নিয়ে যান।

সৌমিক চমকে গেল।অফিসের কাজ তার শেষ হয়েছে।ভাবছিল একবার মার্কেটে যাবে রিকের জন্য একটা সাইকেল কিনে দেবে।সে সব ছেড়ে তাকে এখন যেতে হচ্ছে থানায়।
সৌমিক নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করে।একটা মিছিল এসে আটকে রেখেছে রাস্তাটা।তার মনের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে কত কথার মিছিল।ঠাকুমার মুখে যা জেনেছিল তার কাকা এখন জেলে।রাজনৈতিক কান্ডে স্কুলে পড়তে পড়তেই জড়িয়ে যায়।ঠাকুর্দা বা বাবা কেউই তাঁকে বিশেষ পছন্দ করতেন না।তাই বাড়ীতে তাঁর কথা তোলা ছিল বারণ।ঠাকুমা অবশ্য মাঝে মাঝে বলতেন তার কথা।ছোটবেলায় সে সব শুনেছে সৌমিক।

গাড়ীটা পার্কিং করে থানায় যখন ঢুকল তখন রাত্রি আটটা দশ।থানায় আসার অভিজ্ঞতা তার এই প্রথম।

বড় টেবিলটার ওপাশে এক ভুঁড়িওয়ালা অফিসার বসে চা খাচ্ছে।সৌমিক পরিচয় দিতেই বলল---বসুন বসুন।
---আপনার কাকা পলিটিক্যাল কেসে জেলে ছিল?
---হুম্ম।আপত্তি থাকলেও সত্যটা বলতে হল।
অফিসার ডাকলেন এক কনস্টেবলকে।তারপর কনস্টেবল বেরিয়ে এলো।সঙ্গে একটা বিশাল লম্বা চওড়া লোক।
---ইনি কি আপনার কাকা?
লোকটার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে ছিল অর্ক।কি বিরাট চেহারা।উচ্চতা ছ ফুট চার হবে।চওড়া কাঁধ।গায়ে খাঁকি ময়লা শার্ট।হাতের চওড়া পেশী যেন জামার হাতা ফেটে বের হয়ে আসবে।গায়ের রঙ তামাটে।চুলে পাক ধরেছে।লাল লাল চোখ।মোটা ঠোঁট।কর্কশ রুক্ষ মুখ।গালে একটা পুরোনো চওড়া কাটা দাগ।
ঠাকুমা-ঠাকুর্দা বা বাবা কারোর সাথে মুখের মিল পাচ্ছে না।কেবল ঠাকুমার মুখে শোনা কাকা নাকি লম্বা ছিল ঠাকুরদার মত।কিন্তু এ লোকের হাইটের কাছে ঠাকুর্দাও লিলিপুট মনে হবে।
পুলিশ অফিসার বললেন---কি হল রাঘব বাবু ইনি কি আপনার ভাইপো?
লোকটা থতমত খেয়ে বলল--ভাইপো? আমি তো দেখিনি কখনো।
সৌমিককে সত্যিই কখনো দেখেনি তার কাকা।এমনকি তার মাকেও দেখেনি কখনো।মায়ের বিয়ের আগেই কাকা জেলে গেলেন।
সৌমিক কিছু বুঝবার আগেই অফিসার একটা কাগজ বাড়িয়ে দিলেন।সৌমিক কাগজটা পড়ে যা বুঝল এটা কোনো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সুপারিশ।যেখানে সরকারি শীলমোহর আঁটা।পরিষ্কার লেখা রাঘব চক্রবর্তীর নাম।তার জেল থেকে ছাড়া পাবার মুক্তিপত্র।

সৌমিক এবার নিশ্চিন্ত হল।যাইহোক একটা প্রমান পাওয়া গেল।
লোকটা বলল---দাদা কোথায়? দাদা আসেনি?
সৌমিক হেসে বলল---বাবা নেই।বছর দশেক হল তিনি নেই।

আক্রম নাটকীয় ভাবে মুখটা শুকনো করল।সে আগেই জেনে গেল রাঘববাবুর দাদা প্রয়াত হয়েছেন।আর তাকে চিনে নেবার কেউ নেই।এখন সে কিছু দিন এখানে থেকে কিছু কামিয়ে চম্পট দিবে।
সৌমিক বলল---চলো কাকা।বাড়ী চলো।
আক্রম নাটক করে বলল----না না।সে কি করে হবে।আমি তোমার বাড়ী যাবো কেন?
---কেন নয় কাকা?ওটা তো তোমারও বাড়ী।
-----আমার কি বাড়ী আছে?সে তো কবে বাবা ত্যাজ্য করে দিল।
---সে তো কতকাল পুরোনো কথা।ঠাকুর্দা বেঁচে থাকলে কি এতদিন রাগ পুষে রাখতেন? নিশ্চই না।চলুন।
মনে মনে খুশি হল আক্রম।
গাড়ীর দরজা খুলে বসতে বলল সৌমিক।আক্রম আরাম করে এসি গাড়িতে বসল।
সৌমিক মনে মনে ভাবছে অহনা চমকে যাবে হঠাৎ তার কাকার আবির্ভাব শুনে।অহনাকে সৌমিক বলেছিল একবার যে তার এক কাকা রাজনৈতিক বন্দী হয়ে বিহারের জেলে রয়েছে।কিন্তু হঠাৎ তার এরকম আগমন অহনা ভালো ভাবে নেবে না নিশ্চই। তাছাড়া লোকটা একটা জেল ফেরত আসামি।কি ভয়ঙ্কর চেহারা কাকার।শক্তিশালী একটা দৈত্য যেন।এ লোক যে তাদের বংশের কারোর মত দেখতে নয় তা বুঝতে পারছে সৌমিক।

সৌমিক যখন এতকিছু ভাবছে তখন আক্রম বলল---তোমার নামটা কি ভাইপো?
---সৌমিক।তুমি আমাকে সমু বলে ডাকতে পারো।বাড়ীর সকলে তাই বলে।
---ও! তবে সমু তোমার গাড়ী খানা হেব্বি চিকনা আছে।
সমু হাসল।কাকার মুখের ভাষায় খটকা লাগলো তার।সে শুনেছিল কাকা নাকি বেশিদূর পড়াশোনা করেনি।তাছাড়া বন্দীদের সাথে থাকতে থাকতে নিশ্চই এই রকম ভাষা বলছে।

সৌমিক অফিস থেকে ফিরতে দেরী করলেই অহনা ছাদের ব্যালকনিতে পায়চারি শুরু করে।সৌমিক গাড়ী নিয়ে গ্রিল গেটের কাছে এসেই দেখল অহনা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে।
দরজাটা খুলতেই চমকে উঠল অহনা।সমুর পিছনে এ লোকটি কে?
সমু বলল--এসো কাকা।
কাকা!কে কাকা? চমকে উঠল অহনা।একদৃষ্টে দেখছিল লোকটাকে।কি সাংঘাতিক চেহারার লোক ঘাড় উচু করে দেখতে হয়।
---অহনা ইনি হচ্ছেন আমার রাঘব কাকা। তোমাকে একবার বলেছিলাম না সেই যে আমার এক কাকার কথা।ইনি সেই।
অহনা ভাবলো একি সেই জেলের আসামি কাকা! মুখে তাও কিছু বলল না।আলতো করে হাসলো।
ছ বছরের রিক একবার বেরিয়ে এলো ঘরের মধ্য থেকে।ফ্যালফেলিয়ে দেখল আক্রমকে।ভয় পেয়ে চলে গেল দ্রুত।
সমু হেসে বলল---এই হল আমার ছেলে।
আক্রম তখন ব্যস্ত ছিল অহনাকে পর্যবেক্ষন করতে।একজন যৌনবুভুক্ষু জানোয়ারের চোখের সামনে একজন ত্রিশঊর্ধ সুন্দরী নারী।সে চোখ সরাতে পারছিল না।সৌমিকের কথায় সম্বিৎ ফিরে পেয়ে বলল---তারমানে আমার নাতি?এসো বাবা,এসো।
রিক ভয় পেয়ে মায়ের শাড়ির আঁচল ধরে পেছনে লুকিয়ে পড়ল।অহনা বলল---যাও দাদু তো।ভয় পেয়ো না।প্রনাম করো।
তখনও ভয় কাটছে না রিকের।
আক্রম বলল---নতুন লোক দেখে ভয় পেয়েছে।ঠিক আছে বৌমা।ওর ভয় থাকতে থাকতে কেটে যাবে।
থাকতে থাকতে কেটে যাবে মানে!এই বাড়ীতে থাকবে নাকি?অহনা মনে মনে শঙ্কিত হয়।এমনিতেই জেল ফেরত আসামি,তার ওপর আবার এইরকম তাগড়া দৈত্যাকার চেহারা।না এ লোককে এখানে থাকতে দেওয়া যাবে না।অহনা মনে মনে ঠিক করে নেয়।আজই সমুকে জানিয়ে দেবে।

সমুও বুঝতে পারছিল অহনার অনেক প্রশ্ন আছে।বলল---যাও কাকা এই যে বাথরুম, ফ্রেশ হয়ে এসো।

আক্রম বাথরুমে যেতেই সমু সোজা রান্নাঘরে চলে এলো।ওভেন ধরিয়ে পেছন ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে অহনা।সমুর আগমনে গলা নামিয়ে বলল---এই তোমার কাকা লোকটা কি এই বাড়িতেই থাকবে? কোত্থেকে পেলে এমন সাংঘাতিক লোকটাকে?
সমু বলল--আস্তে অহনা।আমিও শকড।যে কাকাকে কোনো দিন দেখিনি।খুব অল্প শুনেছি যার সম্পর্কে সে হঠাৎ এতদিন পর এসে হাজির! নাম, পরিচয় যা কিছু বলল সব মিলে যাচ্ছে!
---কিন্তু লোকটাকে দেখলে কি সাংঘাতিক চেহারা!দেখলেই খুনে জেলখাটা লোক যে বোঝা যায়। অহনা ভয়ার্ত ভাবে বলল।তোমার বাবার আর ঠাকুর্দার ছবি দেখেছি।ওদের সাথে তো মিল নেই।
---সে মিল তো আমিও খুঁজে পাইনি।তবে ঠাকুমা বলতেন কাকা নাকি খুব লম্বা।
---হুম্ম সে তো দেখতে পাচ্ছি।এই লোকটার হাইট কত হবে গো? অনুসন্ধিৎসায় জিজ্ঞেস করল অহনা।
সমু অহনার কাঁধে হাত রেখে হেসে বলল--ডার্লিং এবার দেখছি ফিতে নিয়ে মাপতে হবে।
---তা যা বলো সমু।তোমার ওই কাকাকে দেখলে কিন্তু ভয় করে।

সমু অহনার দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মুখের কোমল গালে গাল ঘষতে ঘষতে বলল---চেহারা দেখেই ভেবো না খারাপ লোক।আমাদেরই বংশের রক্ত তো।তাছাড়া কাকা তো আর চুরি ডাকাতি করে জেলে যায়নি।রাজবন্দী ছিলেন।
বাথরুমের দরজা খোলার শব্দ পেয়ে অহনা বলল---দেখো, উনার কি লাগবে নাকি।
সমু বেরিয়ে এলো।আক্রম নির্দ্বিধায় বলল---সমু আমার তো জামা কাপড় কিছু নেই।
---কাকা তোমার গায়ে তো আমার জামা-কাপড় ফিট করবে না।তারচেয়ে বরং আজ বাবার পুরোনো লুঙ্গি এনে দিচ্ছি পরে নিও।

রিক এখনো আক্রমকে ভয় পাচ্ছে।সমু বলল--এসো কাকা তোমার ঘরটা দেখিয়ে দিই।
বাবার থাকবার ঘরটাই অনেক দিন বন্ধ ছিল।কিছুদিন আগে অহনা লোক ডাকিয়ে ঘর পরিষ্কার করিয়েছে।ওখানে একটা টিভি সেট,ভিসিআরও রাখা হয়েছে।গেস্ট এলে থাকবার জন্য।

সমু আলোটা জ্বেলে দিল।আক্রম ঢুকে দেখল একজন বয়স্ক লোকের ছবি দেওয়ালে।অবিকল যেন রাঘব চক্রবর্তী।মনে মনে ভাবছিল এখনই যদি সমু তাকে জিজ্ঞেস করে এই ছবিটি কার তবে সে কি বলবে? বাবার না দাদার?
মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সমু বলল--কাকা সামনেই তিনি।এই ছবি নিশ্চই তুমি চিনতে পারছো।
যা ভেবেছিল তাই।আক্রম পড়ল মহা ধন্দে।এখনই কি সে ধরা পড়ে যাবে।সাহস করে বলল---সারা জীবনতো আমাকে ভাই বলে ভাবলে না দাদা।এবার তোমার চরণেই থাকব।
পঁচিশ বছর একই সেলে কাটানো রাঘব চক্রবর্তীর শিক্ষিত বোধের কায়দায় কথাটা বলে ফেলল আক্রম।
সমুর আর কোনো দ্বিধা থাকার কথা নয়।অবাক হয়ে বলল--কাকা তোমার চেয়ে বাবা বয়সে কত বড় ছিল যেন?
---হাঁ,সে বছর দশেকের তো হবেই।
সমু নিশ্চিন্ত।সবই ঠিক বলছে।
---কাকা,বাবা হয়তো খুব রাগ করেছিল তোমার ওপর।মনে মনে নিশ্চই কষ্ট পেত।নিশ্চিন্তের সুর সমুর গলায় ফুটে উঠল।

(চলবে)
[+] 5 users Like Henry's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অ্যাডাল্ট অমনিবাস(+১৮) - by Henry - 28-11-2019, 11:12 PM



Users browsing this thread: 11 Guest(s)