22-11-2024, 11:47 AM
(This post was last modified: 22-11-2024, 12:42 PM by Henry. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
বাবা বেরিয়ে যাবার পর অংশু খাওয়া সেরে কলেজের ইউনিফর্ম পরে পিঠে ব্যাগটা নিয়ে নীচে নামতে যাবে দেখল একটা বিদঘুটে গন্ধ নাকে ঠেকছে তার। পরমুহূর্তেই বুঝতে পারলো গ্রিলের ওপারে গফুর দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওর গা দিয়ে মদের গন্ধ। অংশুকে দেখে হলদে দাঁত বের করে বলল---তোর মা নেই?
---হ্যা। আছে।
তক্ষুনি সিঁড়ির ওপর থেকে মা হাসি মুখে বললে---গফুর দা এসেছ?
লোকটা হাসলো। দাড়ি গোঁফে ভরা মুখে কালো কালো মোটা ঠোঁট দুটির মধ্যে লালার জাল বিন্যাস হল খুব ঘিনঘিনে ভাবে। বলল---ডেকেছিলি আমাকে কেন রে?
অংশু বিস্মিত হল। মা কেন গফুরকে ডেকে পাঠালো! সুচিত্রা অংশুকে বললে---দাঁড়িয়ে রইলি কেন, দেরি হয়ে যাচ্ছে না তোর?
জয়ন্তের হাসপাতালে আজ রোগীর ভিড় লেগে রয়েছে। রোগী দেখতে দেখতে কখন যে সময় পেরিয়ে গেল লাঞ্চের খেয়াল নেই জয়ন্তের।
সুচির পাঠানো টিফিন বক্সটা খুলল সে। ওতে ছোট্ট চিরকুটে লেখা ''আজ জলদি ফেরো। জরুরী কথা আছে।''
জয়ন্ত মনে মনে হাসলো। ওর ওপর সুচির রাগটা হালকা হলে পরে যেন নিস্তার মেলে। খাবার পর হাত মুখ ধুয়ে এসে ওয়ার্ডে ঢুকল সে।
***
কলেজ থেকে ফিরতেই একটা বিদঘুটে গন্ধ নাকে ঠেকছিল অংশুর। কেমন যেন পচা মাছের মত। গন্ধটা যে কি বা কোথা থেকে আসছে বোঝা যাচ্ছে না। একবার ভাবলো রান্না ঘরে বোধ হয় মাছ পচেছে।
ছবি মাসি রাঁধছে তখন। অংশুকে নাক টেনে ঘ্রাণ নিতে দেখে সে বলল---কি হল?
---মাসি, একটা গন্ধ পাচ্ছো? কেমন যেন পচা পচা!
ছবি তখন গরম কড়াইতে তেলে সবে চিংড়ি মাছ ছেড়েছে। বলল---মাছের নাকি? তারপর নাক টেনে বললে---কই না তো!
অংশু ঠিক টের পাচ্ছে না কোথায় এর উৎস। মা সচরাচর বিট্টু-লাট্টুর ঘুমোয় যে ঘরে ও ঘরেই শোয় আজকাল। আজ অবশ্য শুয়েছে নিজেদের বেডরুমে।
খানিকবাদেই অংশু টের পেল গন্ধের উৎস বিট্টু লাট্টুর ঘরেই। ও'ঘরে মেঝেতে একজন শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। অপরজন অর্থাৎ লাট্টু ওর দাদর ওপর দিয়ে প্লাস্টিকের খেলনা গাড়ি চালাচ্ছে। মুখে ওর গাড়ির শব্দ।
অংশু দেখলে ঠিকই ধরেছে গন্ধটা এ ঘর থেকেই। কিছু মরেটরে পড়ল নাকি? ইঁদুর নয়ত? এ ঘরে যে মাঝে মধ্যে ইঁদুরের উৎপাত হচ্ছে আজকাল সে তো তার অজানা নয়। কিন্তু ইঁদুর মরলে অবশ্য এমন গন্ধ হয় না। এই গন্ধটা বরং পাচিত মাছের গন্ধ। একবার কেমিস্ট্রি ল্যাবে ক্লোরিন গ্যাস নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে এমন গন্ধ পেয়েছিল সে।
মা ও' ঘরে ঘুমোনোর কারণ বুঝতে পারলো অংশু। ঘরের বিছানা চাদরটা কাচবার জন্য মেঝেতে এক কোনে ডাঁই করে রেখেছে। সাথেই মায়ের সকালে পরা হাউসকোটটা কাচবার জন্য রাখা। বিছানা চাদরটা তুলে নেওয়ায় ঠাকুমার পুরোনো পালঙ্কের তোষক বেরিয়ে পড়েছে।
অংশু আলো জ্বেলে পালঙ্কের তলাটা দেখলে। তলাটা বেশ ফাঁকা। ছবি মাসিকে দিয়ে প্রতিদিন মোছায় মা। তবে কি জানালার ওপাশ থেকে কোনো গন্ধ আসছে! কে জানে!
সন্ধের দিকটা খুব আলতো করে বাতাস দিচ্ছিল। আচমকা ঝড়ো বাতাস এসে এক পশলা বৃষ্টি ডেকে আনলো।
বৃষ্টি থামতেই ছবি বললে---অংশু, বৌদির শরীর খারাপ নাকি রে?
অংশু পড়তে বসেছে। মা এখনো শুয়ে আছে বিছানায়। অংশু কলেজ থেকে এসেই সেই যে দেখছে পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে মা, এখনো ওঠার নাম নেই। গিয়ে ডাকলো---মা, ওঠো। ছবি মাসি চলে যাবে।
সুচিত্রা ক্লান্ত স্বরে অত্যন্ত অস্পষ্ট ভাবে বললে---হুম্ম। যেতে বল।
জয়ন্ত ফিরল। অপেক্ষায় আছে সে সুচি তাকে কি বলবে। যদি কিছু মন্দ বলে। ভয়টা তার বেশ হচ্ছে। আবার উৎসাহও হচ্ছে। সুচিত্রা গত চারদিনের পর আজই প্রথম কথা বলেছে তার সাথে।
কিন্তু সুচি যেন বিছানা ছেড়ে উঠতেই চায় না। জয়ন্ত দেখলে বৃষ্টির ছিটে ছাদ বারান্দায় এসে পড়ছে। সুচিত্রা উঠল। তারপর ছেলেকে বললে---কাচের শার্সিগুলো টেনে দিতে পারছিস না? ঘরটা ভিজে গেল যে!
জয়ন্ত ঘড়ি দেখল সাড়ে আটটা। এই সুচিত্রার ঘুম ভাঙলো। সুচিত্রা এমন পড়ে পড়ে ঘুমিয়ে থাকার মানুষ নয়। ওর চোখ মুখ বেশ ফোলা ফোলা। চুলগুলো এলোমেলো। খোঁপাটা ঢিলে পড়ে বেণীটা অবিন্যস্ত হয়ে আছে।
লাট্টু সুচিকে দেখতে পেয়েই আঁচল ধরে পিছু নিয়েছে। ঠিক কুক্কুরী মাকে দেখতে পেলে ছানারা দুধ খাবার জন্য যেমন পিছু নেয়, তেমন। জয়ন্ত ভাবলে দুটো জুটেছে ভালোই, সারাক্ষণ সুচির মাই চুষে চলেছে। ওদের সত্যিকারের মায়ের কাছেও বোধ হয় এমন দুধের আশ্রয় পেত না।
সুচি সটান রান্নাঘরে ঢুকে গেল। ছবি চলে যাবার পর টুকটাক কাজ সেরে বেরিয়ে এলো। অংশু বললে---মা খিদে পেয়েছে?
সুচি চোখ বড় বড় করে বলল---ন'টা বাজলো তুই কিছু খাসনি?
অংশু কোনো উত্তর করল না। সুচি পুনরায় বলল---আর ঘন্টা খানেক পরে ভাত খাবি। এখন দুধ গরম করে দিচ্ছি। বিস্কুট দিয়ে খেয়ে নে।
খানিক মধ্যে অংশুকে দুধের গেলাস আর বিস্কুট দিয়ে গেল সুচি। তারপর একবার জয়ন্তকে দেখল। জয়ন্ত তখন সকালের কাগজ পড়তে ব্যস্ত। লাট্টুকে কোলে নিয়ে বিট্টুকে কার্যত হাতে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল ঘরের ভেতর।
অংশু বুঝতে পারলো মা এখনো রেগে আছে। তা নাহলে অমন বিট্টুকে টেনে টেনেই বা নিয়ে গেল কেন ঘরে! দুধের গেলাসটা শেষ করে অংশু দেখলে মা বসে আছে বিছানা পালঙ্কে ঠেস দিয়ে। মায়ের দুটো স্তন দু পাশ থেকে উন্মুক্ত। বিট্টু-লাট্টু দুপাশে মায়ের স্তনে মুখ গুঁজে দুধ টানছে। মা নির্বিকার। যেন মুখে একরাশ বিষাদ বা যন্ত্রনা। চশমার আড়ালেও সেই বিষাদ টের পাওয়া যায়।
চলবে।
---হ্যা। আছে।
তক্ষুনি সিঁড়ির ওপর থেকে মা হাসি মুখে বললে---গফুর দা এসেছ?
লোকটা হাসলো। দাড়ি গোঁফে ভরা মুখে কালো কালো মোটা ঠোঁট দুটির মধ্যে লালার জাল বিন্যাস হল খুব ঘিনঘিনে ভাবে। বলল---ডেকেছিলি আমাকে কেন রে?
অংশু বিস্মিত হল। মা কেন গফুরকে ডেকে পাঠালো! সুচিত্রা অংশুকে বললে---দাঁড়িয়ে রইলি কেন, দেরি হয়ে যাচ্ছে না তোর?
জয়ন্তের হাসপাতালে আজ রোগীর ভিড় লেগে রয়েছে। রোগী দেখতে দেখতে কখন যে সময় পেরিয়ে গেল লাঞ্চের খেয়াল নেই জয়ন্তের।
সুচির পাঠানো টিফিন বক্সটা খুলল সে। ওতে ছোট্ট চিরকুটে লেখা ''আজ জলদি ফেরো। জরুরী কথা আছে।''
জয়ন্ত মনে মনে হাসলো। ওর ওপর সুচির রাগটা হালকা হলে পরে যেন নিস্তার মেলে। খাবার পর হাত মুখ ধুয়ে এসে ওয়ার্ডে ঢুকল সে।
***
কলেজ থেকে ফিরতেই একটা বিদঘুটে গন্ধ নাকে ঠেকছিল অংশুর। কেমন যেন পচা মাছের মত। গন্ধটা যে কি বা কোথা থেকে আসছে বোঝা যাচ্ছে না। একবার ভাবলো রান্না ঘরে বোধ হয় মাছ পচেছে।
ছবি মাসি রাঁধছে তখন। অংশুকে নাক টেনে ঘ্রাণ নিতে দেখে সে বলল---কি হল?
---মাসি, একটা গন্ধ পাচ্ছো? কেমন যেন পচা পচা!
ছবি তখন গরম কড়াইতে তেলে সবে চিংড়ি মাছ ছেড়েছে। বলল---মাছের নাকি? তারপর নাক টেনে বললে---কই না তো!
অংশু ঠিক টের পাচ্ছে না কোথায় এর উৎস। মা সচরাচর বিট্টু-লাট্টুর ঘুমোয় যে ঘরে ও ঘরেই শোয় আজকাল। আজ অবশ্য শুয়েছে নিজেদের বেডরুমে।
খানিকবাদেই অংশু টের পেল গন্ধের উৎস বিট্টু লাট্টুর ঘরেই। ও'ঘরে মেঝেতে একজন শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। অপরজন অর্থাৎ লাট্টু ওর দাদর ওপর দিয়ে প্লাস্টিকের খেলনা গাড়ি চালাচ্ছে। মুখে ওর গাড়ির শব্দ।
অংশু দেখলে ঠিকই ধরেছে গন্ধটা এ ঘর থেকেই। কিছু মরেটরে পড়ল নাকি? ইঁদুর নয়ত? এ ঘরে যে মাঝে মধ্যে ইঁদুরের উৎপাত হচ্ছে আজকাল সে তো তার অজানা নয়। কিন্তু ইঁদুর মরলে অবশ্য এমন গন্ধ হয় না। এই গন্ধটা বরং পাচিত মাছের গন্ধ। একবার কেমিস্ট্রি ল্যাবে ক্লোরিন গ্যাস নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে এমন গন্ধ পেয়েছিল সে।
মা ও' ঘরে ঘুমোনোর কারণ বুঝতে পারলো অংশু। ঘরের বিছানা চাদরটা কাচবার জন্য মেঝেতে এক কোনে ডাঁই করে রেখেছে। সাথেই মায়ের সকালে পরা হাউসকোটটা কাচবার জন্য রাখা। বিছানা চাদরটা তুলে নেওয়ায় ঠাকুমার পুরোনো পালঙ্কের তোষক বেরিয়ে পড়েছে।
অংশু আলো জ্বেলে পালঙ্কের তলাটা দেখলে। তলাটা বেশ ফাঁকা। ছবি মাসিকে দিয়ে প্রতিদিন মোছায় মা। তবে কি জানালার ওপাশ থেকে কোনো গন্ধ আসছে! কে জানে!
সন্ধের দিকটা খুব আলতো করে বাতাস দিচ্ছিল। আচমকা ঝড়ো বাতাস এসে এক পশলা বৃষ্টি ডেকে আনলো।
বৃষ্টি থামতেই ছবি বললে---অংশু, বৌদির শরীর খারাপ নাকি রে?
অংশু পড়তে বসেছে। মা এখনো শুয়ে আছে বিছানায়। অংশু কলেজ থেকে এসেই সেই যে দেখছে পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে মা, এখনো ওঠার নাম নেই। গিয়ে ডাকলো---মা, ওঠো। ছবি মাসি চলে যাবে।
সুচিত্রা ক্লান্ত স্বরে অত্যন্ত অস্পষ্ট ভাবে বললে---হুম্ম। যেতে বল।
জয়ন্ত ফিরল। অপেক্ষায় আছে সে সুচি তাকে কি বলবে। যদি কিছু মন্দ বলে। ভয়টা তার বেশ হচ্ছে। আবার উৎসাহও হচ্ছে। সুচিত্রা গত চারদিনের পর আজই প্রথম কথা বলেছে তার সাথে।
কিন্তু সুচি যেন বিছানা ছেড়ে উঠতেই চায় না। জয়ন্ত দেখলে বৃষ্টির ছিটে ছাদ বারান্দায় এসে পড়ছে। সুচিত্রা উঠল। তারপর ছেলেকে বললে---কাচের শার্সিগুলো টেনে দিতে পারছিস না? ঘরটা ভিজে গেল যে!
জয়ন্ত ঘড়ি দেখল সাড়ে আটটা। এই সুচিত্রার ঘুম ভাঙলো। সুচিত্রা এমন পড়ে পড়ে ঘুমিয়ে থাকার মানুষ নয়। ওর চোখ মুখ বেশ ফোলা ফোলা। চুলগুলো এলোমেলো। খোঁপাটা ঢিলে পড়ে বেণীটা অবিন্যস্ত হয়ে আছে।
লাট্টু সুচিকে দেখতে পেয়েই আঁচল ধরে পিছু নিয়েছে। ঠিক কুক্কুরী মাকে দেখতে পেলে ছানারা দুধ খাবার জন্য যেমন পিছু নেয়, তেমন। জয়ন্ত ভাবলে দুটো জুটেছে ভালোই, সারাক্ষণ সুচির মাই চুষে চলেছে। ওদের সত্যিকারের মায়ের কাছেও বোধ হয় এমন দুধের আশ্রয় পেত না।
সুচি সটান রান্নাঘরে ঢুকে গেল। ছবি চলে যাবার পর টুকটাক কাজ সেরে বেরিয়ে এলো। অংশু বললে---মা খিদে পেয়েছে?
সুচি চোখ বড় বড় করে বলল---ন'টা বাজলো তুই কিছু খাসনি?
অংশু কোনো উত্তর করল না। সুচি পুনরায় বলল---আর ঘন্টা খানেক পরে ভাত খাবি। এখন দুধ গরম করে দিচ্ছি। বিস্কুট দিয়ে খেয়ে নে।
খানিক মধ্যে অংশুকে দুধের গেলাস আর বিস্কুট দিয়ে গেল সুচি। তারপর একবার জয়ন্তকে দেখল। জয়ন্ত তখন সকালের কাগজ পড়তে ব্যস্ত। লাট্টুকে কোলে নিয়ে বিট্টুকে কার্যত হাতে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল ঘরের ভেতর।
অংশু বুঝতে পারলো মা এখনো রেগে আছে। তা নাহলে অমন বিট্টুকে টেনে টেনেই বা নিয়ে গেল কেন ঘরে! দুধের গেলাসটা শেষ করে অংশু দেখলে মা বসে আছে বিছানা পালঙ্কে ঠেস দিয়ে। মায়ের দুটো স্তন দু পাশ থেকে উন্মুক্ত। বিট্টু-লাট্টু দুপাশে মায়ের স্তনে মুখ গুঁজে দুধ টানছে। মা নির্বিকার। যেন মুখে একরাশ বিষাদ বা যন্ত্রনা। চশমার আড়ালেও সেই বিষাদ টের পাওয়া যায়।
চলবে।